মাদারীপুরে দেয়ালে দেয়ালে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ লেখা গ্রাফিতি

মাদারীপুর সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বিভিন্ন দেয়ালে স্প্রে দিয়ে গ্রাফিতি আঁকেন হেলমেট পরা এক ব্যক্তিছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুর সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি দেয়ালে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ লেখা গ্রাফিতি আঁকার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি গ্রাফিতিগুলোর ছবি-ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার ধুরাইল, পাঁচখোলা, খোয়াজপুরসহ কয়েকটি এলাকার দেয়ালে এসব গ্রাফিতির নিচে ‘মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগ’ লেখা আছে। জেলার পলাতক ছাত্রলীগ নেতারা এসব গ্রাফিতির ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। তাঁরা নিজেদের ফেসবুকে ‘আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ খুব শিগগিরই ফিরছে’ বলেও স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

সম্প্রতি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা গা ঢাকা দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের একাধিক কর্মী মুঠোফোনে জানান, বর্তমান সরকার তাঁদের কোনো কার্যক্রম প্রকাশ্যে করতে দিচ্ছে না। তাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের অবস্থান জানান দিতেই মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুরাইল, পাঁচখোলা, খোয়াজপুরসহ কয়েকটি এলাকার দেয়ালে এ ধরনের গ্রাফিতি করেছেন। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মাঠে নেমে প্রচারপত্র বিলিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ডাক দেন তাঁরা।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হেলমেট পরে একজন ছাত্রলীগ কর্মী হাতে স্প্রে দিয়ে দেয়ালে লাল ও সবুজ রঙের গ্রাফিতি করছেন। অনেক দেয়ালে ও রাস্তায় ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ লিখতেও দেখা যায়।
মাদারীপুর পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি নোবেল ব্যাপারী তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘“শেখ হাসিনাতেই আস্থা” ক্যাম্পেইন। আদর্শিক লড়াই চলছে, চলবে। ছাত্রলীগ লড়বে। দাবায়ে রাখতে পারবা না।’

ফেসবুকে এ ধরনের প্রচারণার তীব্র সমালোচনা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাঁরা বলছেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার মতো ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও ভয়ে পালিয়ে গেছেন।

মাদারীপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুল তামিম বলেন, নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কয়েক দিন ধরেই ফেসবুকে হুংকার দিচ্ছেন। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের খুঁজছেন। রাজপথে তাঁরা সাহস নিয়ে নামলে তখনই বোঝা যাবে—কাদের অবস্থান কোথায়। তাঁরা এসব গ্রাফিতি করে জনমনে আবার আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। তাঁদের উদ্দেশ্য কোনোভাবেই সফল হবে না। তাঁদের বিরুদ্ধে লড়তে ছাত্র-জনতা প্রস্তুত।