মতলব উত্তরে মেঘনার ভাঙনে বাড়ি, ফসলি জমি বিলীন, হুমকিতে ১০ গ্রাম
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় গত চার দিনে মেঘনার ভাঙনে উপজেলার বাগানবাড়ি, খাগুরিয়া, নবীপুর ও হাপানিয়া গ্রামের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও ফসলি খেত বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে নদীর তীরঘেঁষা আরও ১০টি গ্রাম ও মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধ। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
আজ বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলার বাগানবাড়ি, খাগুরিয়া, হাপানিয়া ও নবীপুর এলাকায় দেখা যায়, সেখানকার ৮০০ মিটার এলাকাজুড়ে মেঘনার ভাঙন চলছে। মেঘনার ঢেউ ও স্রোতের আঘাতে সেখানকার বেশ কিছু ফসলি জমি, বাড়িঘর ও স্থাপনা নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে। তীর-সংলগ্ন বেশ কিছু গাছপালাও নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। কিছু বাসিন্দা ভাঙনের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঘরের মালামাল অন্য জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছেন। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে কালীপুর, লালপুরসহ আরও অন্তত ১০টি গ্রাম। মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের মূল বেড়িবাঁধও রয়েছে ভাঙনের হুমকিতে। প্রতিদিন ভাঙনের তীব্রতা বাড়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভাঙন রোধে পাউবোর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
খাগুরিয়া, হাপানিয়া, কালীপুর, নবীপুর ও বাগানবাড়ির অন্তত ১৫ জন বাসিন্দা বলেন, গত চার দিনে মেঘনার ভাঙন বেড়েছে। এ সময় তাঁদের এলাকার ৩ থেকে ৪ একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ১৫ থেকে ১৬টি ঘরবাড়ি, ১টি সেতু, ১০টি দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনা মেঘনার পেটে চলে গেছে। ঘরবাড়ি ও জমি হারানোর আশঙ্কায় ঘুমহীন রাত কাটাচ্ছে ১০টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা।
বাগানবাড়ি এলাকার বিএনপি নেতা মিয়া মনজুর আমিন ওরফে স্বপন অভিযোগ করে বলেন, প্রায় প্রতিদিন তাঁর এলাকায় মেঘনার ভাঙনে কোনো না কোনো ঘরবাড়ি, ফসলি খেত ও স্থাপনা বিলীন হচ্ছে। ভাঙনের তীব্রতা বাড়ায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধও হুমকির মুখে পড়েছে। বিষয়টি পাউবো কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। তাঁরা নির্বিকার।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম সাহেদ বলেন, ভাঙনের এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, মেঘনার ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে জানাবেন। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোও পরিদর্শন করবেন।