নাটোরে আদালতের মালখানা থেকে ৬১ লাখ টাকাসহ স্বর্ণালংকার চুরি
নাটোরে আদালতের মালখানা থেকে ৬১ লাখ ৩৯ হাজার নগদ টাকাসহ ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৯ কেজি রুপা চুরি হয়ে গেছে। মালখানার গ্রিল ও তালা ভেঙে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় চুরির ঘটনা ঘটলেও আজ শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি জানাজানি হয়।
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তারা বরখাস্ত এক পুলিশ সদস্যসহ চারজনকে আটক করেছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। মামলার প্রস্তুতি চলছে। টাকা ও মালামাল উদ্ধারের পাশাপাশি চোর চক্রকে ধরতে পুলিশ মাঠে আছে।
চুরি যাওয়া টাকার মধ্যে সম্প্রতি জেলার সিংড়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলীর হেফাজত থেকে উদ্ধার হওয়া ৩৭ লাখ টাকাও ছিল। পুলিশের ধারণা, ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে চোর চক্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
সদর থানা সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আদালত পুলিশের এক সদস্য মালখানার জানালার গ্রিল ভাঙা দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে আদালত পরিদর্শককে খবর দিলে তিনি এসে মালখানা খুলে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হন। খবর পেয়ে নাটোরের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ শেখ মো. নাসিরুল হক ও পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তখন থেকে মালখানার মালামাল রেজিস্টার পরীক্ষা করা শুরু হয়। সন্ধ্যা নাগাদ নিশ্চিত হওয়া যায় যে মালখানা থেকে নগদ ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৯ কেজি রুপা চুরি হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে আদালত পরিদর্শক মোস্তফা কামাল বাদী হয়ে সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পরিদর্শক মোস্তফা কামাল জানান, মালখানা পাহারায় প্রহরী ছিলেন। তা ছাড়া মালখানা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিল। কিন্তু চোর চক্র পেছনের জানালার গ্রিল ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে এবং লকারের তালা ভেঙে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করেছে। একই সঙ্গে তারা সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক বক্স খুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় কর্তব্যরত ব্যক্তিদের অবহেলা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। অবহেলা থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরের দিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরপরই মালখানার মালামাল রেজিস্টার দেখে মেলানোর কাজ চলছিল। সন্ধ্যা নাগাদ একটা হিসাব পাওয়া গেছে। তাতে নগদ ৬১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, ১৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৯ কেজি রুপা চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, এই টাকার মধ্যে গত ১৪ মার্চ সিংড়ায় নাটোর-বগুড়া মহাসড়কে গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী কর্মকর্তা ছাবিউল ইসলামের কাছ থেকে উদ্ধার করা ৩৬ লাখ ৯৪ হাজার ৩০০ টাকাও রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চোর চক্র ওই টাকা হাতিয়ে নিতেই এই চুরি করার উদ্যোগ নিয়েছিল।