ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, হিন্দু পরিবারের ৮ সদস্যকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করল পুলিশ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় একটি হিন্দু পরিবারের আট সদস্যকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এর মধ্যে দুজন শিশু, একজন কিশোরী ও দুজন নারী রয়েছেন। তাঁদের কাছে পাসপোর্ট বা ভিসা ছিল না। তাঁদের অবৈধভাবে সীমান্ত পার করতে সহায়তাকারী একজন দালালকেও আটক করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের গোলাপদীগছ সীমান্ত থেকে বিজিবির নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন শুকানী বিওপির টহলরত সদস্যরা তাঁদের আটক করেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক ব্যক্তিদের তেঁতুলিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি। তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ওই হিন্দু পরিবারের আট সদস্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা না দিয়ে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
সীমান্তে আটক ব্যক্তিরা হলেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিষ্ণুপুর এলাকার রমেশ দাস (৩৮), তাঁর স্ত্রী আরতী দাস (৩৭), তাঁদের ছেলে পল্লব দাস (১২); একই পরিবারের সুশীল দাস (৩৯), তাঁর স্ত্রী পাতলী রাণী দাস (৩৪), তাঁদের ছেলে প্রান্ত দাস (১০) ও মেয়ে সুবর্ণা দাস (১৪); একই পরিবারের পরিমল দাস (২৮) এবং তেঁতুলিয়ার ভজনপুর ইউনিয়নের গোলাপদীগছ এলাকার সাইদুল ইসলাম (৪৪)।
বিজিবির শুকানী বিওপির হাবিলদার মামুন আলী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার দিবাগত গভীর রাতে বিজিবির একটি টহল দল শুকানী সীমান্তের ৭৩৯ নম্বর মেইন পিলারের ৪ নম্বর সাবপিলার এলাকায় টহল দিচ্ছিল। এ সময় গোলাপদীগছ এলাকা দিয়ে নারী, শিশুসহ কয়েকজন মানুষ ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। পরে সেখান থেকে ৯ জনকে আটক করা হয়। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে নিয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের শুকানী বিওপিতে নেওয়া হয়। পরে তাঁদের তেঁতুলিয়া মডেল থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আটক ব্যক্তিরা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। তাঁদের ওপর কেউ নির্যাতন বা কেউ কোনো চাপ প্রয়োগ করেননি। পুলিশ ও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে ওই আটজনকে ভারতে পাঠানোর সহায়তাকারী সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগের একটি অভিযোগ থাকায় তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
পরে সন্ধ্যায় আবারও যোগাযোগ করা হলে ওসি সুজয় কুমার রায় জানান, আটক হিন্দু পরিবারটির আট সদস্যকে আজ বিকেলে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।