স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে গৃহবধূকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৫
স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথে কুমিল্লার লাকসামে এক গৃহবধূকে (১৯) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত শনিবার ভুক্তভোগী তরুণীর মা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
আজ সোমবার সকালে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে গতকাল রোববার অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আজ সকালে কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার প্রয়াত খলিলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৫), পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে মো. মাসুদ (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মনির হোসেন হৃদয় (২৩), উত্তর বিনই এলাকার প্রয়াত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩) এবং মধ্য লাকসাম এলাকার প্রয়াত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার ওরফে কল্পনা (৪০)। তাঁদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী ও মাসুদ তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন, বাকিরা সহযোগী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নোয়াখালীর সোনাপুর এলাকার এক গৃহবধূ তাঁর স্বামীর সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার লাকসামে তাঁর নানাশ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। সেখান থেকে গত শুক্রবার ভোরে এ দম্পতি কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম পৌরসভার বাইপাস মোড় এলাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময় বাস না পেয়ে তাঁরা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। তখন অটোরিকশাচালক মো. মাসুদ জানতে চান, তাঁরা স্বামী-স্ত্রী কিনা। পরে কৌশলে তাঁদের দুজনকে লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে আসামি তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করেন এবং লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যান। পরে তাঁকে লাকসাম পৌরসভার পাইকপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে আসামি মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। এরপর তাঁকে লাকসাম পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় আসামি বিলকিছ আক্তার ওরফে কল্পনার ভাড়া বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে পুনরায় ধর্ষণ করা হয়। ওই দিনই স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গৃহবধূকে তাঁর পরিবার উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে তাঁর মা বাদী হয়ে লাকসাম থানায় অভিযোগ করেন। গতকাল সকালে মামলাটি নথিভুক্ত হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও লাকসাম থানার পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা দ্রুত অভিযান শুরু করি। পরে লাকসামের বিভিন্ন স্থানে গতকাল দিনভর অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হয়েছে। দুজন মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন, বাকিরা সহযোগী ছিলেন। মেয়েটির সঙ্গে মামলার আসামিদের আগের কোনো পরিচয় নেই। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠার পর মোহাম্মদ আলী ও মাসুদ কৌশলে তুলে নিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে।’