শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারে ভর্তিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী। আজ সোমবার বিকেল পৌনে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন তাঁরা। এর আগে বেলা একটার দিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানের পরও বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা বহাল থাকাকে আমাদের জন্য লজ্জাজনক ও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই, কোটা সংস্কারের নামে বৈষম্যের ধারাবাহিকতা আর চলতে দেওয়া হবে না। আলোচনা সাপেক্ষে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সন্তানদের কোটা রাখা যেত। তবে স্বাধীনতা লাভের ৫৪ বছর পর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে এই কোটাও বাতিল হওয়া উচিত বলে মনে করি। এ ছাড়া হরিজন, দলিত, চা–শ্রমিক ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কোটা ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের কোটা বহাল রাখা যায়। এ ছাড়া সব অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিম্ন, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য বহাল রাখা কোটাগুলোয় যদি পর্যাপ্ত যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া যায়, তবে সেই সিটগুলোয় মেধার ভিত্তিতে পূর্ণ করতে হবে। হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি, এই সময়ের মধ্যে প্রশাসন যদি বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বাতিল না করে, তবে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আর কোনো কালক্ষেপণ মেনে নেওয়া হবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে কোটা সংস্কারের দাবির বিষয়ে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘কোটার আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের ভাই রুদ্র সেন জুলাইয়ে শহীদ হয়েছেন। আমরা বলতে চাই, আপনারা যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোটা বাতিল না করেন, তাহলে রুদ্র সেনকে ফিরিয়ে দেন। এরপরও কোটা বাতিল না হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম ও স্মারকলিপির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির স্মারকলিপিটি তিনি পেয়েছেন। সবার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শাবিপ্রবিতে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তিতে কোটাসহ মোট আসনসংখ্যা ১ হাজার ৬৭১। ২৮টি বিভাগে মূল আসন ১ হাজার ৫৬৬। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মূল আসন ছাড়া অতিরিক্ত হিসেবে ১০৫টি কোটা আসন রয়েছে। এসব আসন মূল আসন থেকে আলাদা। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২৮ জন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বা জাতিসত্তা বা হরিজন–দলিত কোটায় ২৮, প্রতিবন্ধী কোটায় ১৪, পোষ্য কোটায় ২০, চা–শ্রমিক কোটায় ৫ ও বিকেএসপি (খেলোয়াড়) কোটায় ১০ শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান।