মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল রাজবাড়ীর যুবকের, বৃদ্ধ বাবার ওপর ঋণের বোঝা

সড়ক দুর্ঘটনাপ্রতীকী ছবি

পরিবারের অভাব ঘোচাতে ১০ মাস আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান রাজবাড়ীর কালুখালীর আবদুল মাজেদ খান (২৮)। কাজ না পেয়ে কয়েক মাস বসে থেকে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার উপক্রম হয়। নতুন ভিসার জন্য মেডিকেল করতে যাওয়ার সময় গত সোমবার সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।

মাজেদ কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর গ্রামের মোয়াজ্জেম খানের ছেলে। নিহত ব্যক্তির পরিবার জানায়, তিন ছেলের মধ্যে আবদুল মাজেদ খান সবার বড়। প্রায় সাত বছর আগে বিয়ে করলেও স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দুই বছরের মাথায় ছাড়াছাড়ি হয়। তাঁর বাবা মোয়াজ্জেম হোসেনের সামান্য চায়ের দোকানের আয়ের ওপর নির্ভর করে চলে তাঁদের পরিবার। পরিবারের অভাব ঘোচাতে ছয় লাখ টাকা ঋণ করে গত বছর কোরবানির ঈদের ১০ দিন আগে মালয়েশিয়ায় যান মাজেদ। মালয়েশিয়া গিয়ে কাজ না পাওয়ায় কয়েক মাস বসে ছিলেন। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার পেনাং শহরের একটি কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। ভিসার মেয়াদ প্রায় শেষ হওয়ায় গত সোমবার সকালে নতুন করে ভিসার জন্য মেডিকেল করতে যাচ্ছিলেন মাজেদ। পথে দ্রুতগতির গাড়ির চাপায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

নিহত ব্যক্তির বাবা বলেন, স্থানীয়দের থেকে তিন লাখ টাকা সুদে নিয়ে এবং আরও তিন লাখ টাকা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ছয় লাখ টাকায় মাজেদকে মালয়েশিয়ায় পাঠান। ১০ মাসে মাত্র ৪০ হাজার টাকার মতো বাড়ি পাঠাতে পেরেছেন। এখনো সুদের তিন লাখ টাকাসহ ঋণের ছয় লাখ টাকার ভার তাঁর কাঁধে পড়ে আছে। প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি তাঁকেই পরিশোধ করতে হচ্ছে। একদিকে ছেলের ঋণের টাকার কিস্তি অন্যদিকে সংসার খরচ মেটাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন।

নিহত ব্যক্তির বাবা আরও বলেন, সোমবার বেলা দুইটার দিকে এলাকার প্রতিবেশী মোমিন মীর তাঁকে ফোন করে মাজেদের দুর্ঘটনার খবর জানান। এখনো ছেলের লাশ স্থানীয় হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। মোমিন মীর জানিয়েছেন, কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে ছেলের লাশ পাঠানোর চেষ্টা চলছে। ছেলের লাশ আনার মতো আর্থিক ক্ষমতা নেই তাঁর। সরকারের কাছে তাঁর আবেদন অন্তত ছেলের লাশটি যেন দেশে আনার ব্যবস্থা করে দেন।