আখাউড়ায় চুরির অপবাদে তিন নারীর চুল কেটে নির্যাতন, একজন আটক

নারী নির্যাতন
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে চুরির অপবাদে তিন নারীর চুল কেটে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আজ সোমবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে উপজেলার মসজিদপাড়া এলাকা থেকে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর নাম সুমন দাস।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল রোববার রাতে উপজেলার পৌর এলাকার সড়ক বাজারে এনসিসি ব্যাংক লিমিটেডের নিচে অবস্থিত চাঁদপুর অ্যালুমিনিয়াম স্টোরের সামনে তিন নারীকে মারধরসহ চুল কেটে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর বিচার দাবি করেছেন অনেকে।

আটক সুমন আখাউড়া সড়ক বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস এম ইলেকট্রিক কর্নারের স্বত্বাধিকারী ও উপজেলার মসজিদপাড়ার বাসিন্দা। ঘটনার সঙ্গে উপজেলার লাল বাজারের বাসিন্দা মো. রাব্বিসহ কয়েকজন যুবক জড়িত রয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। রাব্বি সড়ক বাজারের মা টেলিকমের স্বত্বাধিকারী।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাত আটটার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার সড়ক বাজারে এনসিসি ব্যাংক লিমিটেডের নিচে অবস্থিত চাঁদপুর অ্যালুমিনিয়াম স্টোরে চুরির ঘটনা ঘটে। চুরির সঙ্গে জড়িত তিন নারীকে হাতেনাতে আটক করেন দোকানি। পরে সুমন, মো. রাব্বিসহ স্থানীয় কয়েকজন যুবক তিন নারীকে প্লাস্টিকের পাইপ ও লোহার রড দিয়ে মারধর করেন। ওই সময় সুমন ও তাঁর সহযোগী রাব্বি বোরকা পরিহিত নারীদের মাথার কাপড় খুলে ফেলেন।

একপর্যায়ে ওই নারীদের মাথার চুল কাটেন সুমন। এ সময় ওই নারীদের সঙ্গে থাকা একটি শিশু ভয়ে চিৎকার করতে থাকে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে রোববার রাতেই ছড়িয়ে পড়ে। এতে আখাউড়াজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে। আজ সকালে স্থানীয়রা আখাউড়া থানা-পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দেন।

ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে বোরকা পরিহিত তিনজনসহ চার নারী। তাঁদের সঙ্গে এক কিশোরীও বোরকা পরা। এর মধ্যে তিন নারীকে হেনস্তা করা হচ্ছে। স্থানীয় যুবকেরা তাঁদের আটকে রেখেছেন। অনেকেই ঘটনার ভিডিও করছিলেন। এ সময় তিন নারীকে আতঙ্কিত দেখাচ্ছিল। তাঁদের সঙ্গে থাকা কিশোরী কাঁদছিল। কয়েকজন নারীদের ধাক্কা দেওয়াসহ গালমন্দ করছিলেন। ছাই রঙের গেঞ্জি ও চোখে চশমা পরা এক যুবক এক নারীকে ধরে রেখেছেন। পাশ থেকে এক ‍যুবক পাইপ ও লোহার রড দিয়ে ওই নারীকে পেটাচ্ছিলেন। সুমনকে দেখা যায়, কাঁচি দিয়ে এক নারীর চুল কাটছেন। এ সময় অন্য দুই নারীকে আটকে রাখতে দেখা যায় স্থানীয় যুবকদের।

আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় সুমন নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের নাম পাওয়া গেছে। তাঁদের আটকের চেষ্টা চলছে। তিনি সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই নারীদের খোঁজে পাওয়া যায়নি। তবে তিন নারীর চুল কাটা হয়েছে।