শেখ হাসিনা চলে গেছেন মানে এই নয়, আওয়ামী লীগ হাওয়া হয়ে গেছে: নুরুল হক
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা চলে গেছেন, আওয়ামী লীগ চুপচাপ আছে, তার মানে এই নয়, আওয়ামী লীগ হাওয়া হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আস্ফালন আমরা দেখতে পাচ্ছি। তারা হরতাল ডেকেছে। বিএনপি, জামায়াত, গণ অধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন যারা আছেন, তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকবে, প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু আমাদেরকে এক বিন্দুতে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না। তাহলে আওয়ামী লীগ আবারও ভয়ংকর রূপে ফিরে আসবে।’
আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে নীলফামারীর জলঢাকা সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। আপনারা দেখেছেন ভারতের সহযোগিতায় আরেকটি নীলনকশা নিয়ে ক্ষমতায় এসে এ দেশের গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এই দেশটাকে ভারতের করদ রাজ্যে পরিণত করেছিল। যার ফলে ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলেছিল। সীমান্তে প্রতিনিয়ত লাশ পড়েছিল। আমরা নিজ দেশে পরাধীন হয়ে ছিলাম। যদি আবার ফিরে আসে, এর চেয়েও ভয়ংকর পরিস্থিতি হবে। এ কারণে আওয়ামী লীগকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া যাবে না। দেশের রাজনীতিতে আর মাথাচাড়া দিতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিদেশি শক্তির ওপরে ভর করে এ দেশে গণহত্যা চালিয়ে মায়ের বুক খালি করেছে।’
এ সময় দলবাজ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ পাই যে তাঁরা আগের মতো কেউ কেউ আওয়ামী লীগ নিয়ে চলছেন। এখন আবার অন্য কোনো কোনো দলের প্রতি প্রীতি দেখান। অন্যদেরকে তোয়াক্কা না করে সেই দলকে নিয়েই আবার একটা দলীয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চান। প্রশাসনে যাঁরা দলবাজি করবেন, তাঁরা চাকরি ছেড়ে রাজনীতি করুন। প্রশাসনে কোনো দলবাজি চলবে না।’
গণ অধিকার পরিষদ সভাপতি বলেন, ‘বিপ্লবের পরে, গণ–অভ্যুত্থানের পরে বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা থাকে। সমাজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। নৈরাজ্য চলে। বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তাই গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকার দলমত-নির্বিশেষে সবার সরকার। এই সরকারের সফলতার ওপরে নির্ভর করবে আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। এই সরকারের ওপরে নির্ভর করবে এই জাতির ভবিষ্যৎ। সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।’
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের সহপ্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক মো. সোহাগ হোসাইন। প্রধান বক্তা ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র মো. ফারুক হাসান। সমাবেশের উদ্বোধন করেন গণ অধিকার পরিষদের জলঢাকা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. তাইজুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা মো. হানিফ খান, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ মোন্নাফ, রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক মো. ইব্রাহিম, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. বিন ইয়ামিন মোল্লা, কেন্দ্রীয় যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদুল হক প্রমুখ।