সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের কথা জানিয়েছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তিনি ওই কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক। ছাত্রকে গুলি করে আলোচনায় আসেন এই শিক্ষক। ডিবির ভাষ্য, অস্ত্রের প্রতি তাঁর বিশেষ আকর্ষণ ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, রায়হান শরীফের হেফাজত থেকে গতকাল সোমবার সেভেন পয়েন্ট ফাইভ সিক্স বোরের অত্যাধুনিক দুটি বিদেশি পিস্তল, ৮১টি গুলি, চারটি ম্যাগাজিন ও ১২টি বিদেশি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ ডিবির পরিদর্শক জুলহাজ উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আরাফাত আমিনের বাবা বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া ধানসিঁড়ি এলাকার আবদুল্লাহ আল আমিনের করা মামলায় শিক্ষক রায়হান শরীফকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর মুঠোফোন ঘেঁটে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা অত্যাধুনিক বিদেশি পিস্তলের বহু ছবি পাওয়া গেছে। আরও অস্ত্র আছে কি না, খোঁজ নিতে গতকাল তাঁকে নিয়ে তাঁর বিএ কলেজ রোডের প্রফেসর গার্ডেন নামের বাসায় অভিযান চালানো হয়। তবে বাসা থেকে নতুন কোনো অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।
এই কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার্থীর পায়ে গুলি করার ঘটনায় গতকালই রায়হান শরীফকে আটক করা হয়। তখন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, একটি বিদেশি পিস্তল তিনি লাখ টাকায় কিনেছিলেন। অস্ত্রের প্রতি তাঁর বিশেষ আকর্ষণ ছিল।
ইন্টারনেটে বিদেশি পিস্তলের ছবি দেখলেই ডাউনলোড করে রাখতেন। এরপর বিদেশি অস্ত্র কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েন। রায়হান শরীফের মুঠোফোনের হোয়াটস অ্যাপে দেখা গেছে, একজন চিকিৎসক তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন তিনি কিসের ব্যবসা করেন। জবাবে তিনি লিখেছেন, ‘অস্ত্র কেনাবেচার ব্যবসা।’
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে গতকাল রাত ১২টার পর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি মামলার বাদী গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আরাফাত আমিনের বাবা আবদুল্লাহ আল আমিন। এই মামলায় তিনি তাঁর ছেলেকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ এনেছেন। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ ডিবির উপপরিদর্শক আবদুল ওয়াদুদ বাদী হয়ে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছেন।