সিলেটে ছাত্রদল-জামায়াতের সঙ্গে ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের সংঘর্ষ, আটক ৬
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে সিলেটে ছাত্রদল ও জামায়াতের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পথচারীসহ অন্তত সাতজন আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ ছাত্রদল ও বিএনপির ছয় নেতা-কর্মীকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংগঠনের এক নেতাকে পুলিশ হত্যা করেছে অভিযোগ এনে সিলেটে বিভাগের চার জেলায় অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি আজ বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে ছাত্রদল। হরতালের সমর্থনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও মহানগর ছাত্রদল নগরের বন্দরবাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় তারা পিকেটিং করে এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
ছাত্রদলের পিকেটিং চলাকালে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য বন্দরবাজার হয়ে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বরে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। এ সময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেয়। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়ায় ছাত্রলীগের কর্মীরা পিছু হটে। তখন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলার সময় বন্দরবাজারের পার্শ্ববর্তী মহাজনপট্টি এলাকায় জামায়াতের কয়েক শ নেতা-কর্মী অবরোধের সমর্থনে পৃথক একটা বিক্ষোভ মিছিল করার জন্য জড়ো হন। জামায়াতের সদস্যরা মিছিল নিয়ে বন্দরবাজারের দিকে এলে তাঁরাও একসময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা ৫০ থেকে ৬০টি মোটরসাইকেল নিয়ে মিছিল করে শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। তখন চার পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষ চলে অন্তত আধা ঘণ্টা। এ সময় পাল্টাপাল্টি ইট–পাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পথচারীসহ অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের পরিচয় জানা যায়নি।
সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন জানান, ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ তাঁদের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেয়। পরে তাঁরাও পাল্টা ধাওয়া দেন।
অন্যদিকে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু বলেন, ছাত্রদল-বিএনপির সদস্যরা ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীকে আক্রমণ করেছিলেন। তখন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিষয়টা চোখে পড়ে। পরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ধাওয়ায় ছাত্রদল সরে গেছে।
সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী বলেন, অবরোধের সমর্থনে জামায়াতের একটা নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। নগরের মহাজনপট্টি এলাকা থেকে মিছিলটি নিয়ে বন্দরবাজার আসার পর ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সংঘর্ষের মধ্যে জামায়াত পড়ে যায়। তবে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে নেতা-কর্মীদের সংবরণ করে তাঁরা দ্রুত সেখান থেকে চলে আসেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. আজবাহার আলী শেখ বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেটের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এ সময় বিএনপি ও ছাত্রদলের ছয় নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়।