সরস্বতীপূজার ব্যানারের ওপর ছাত্রশিবিরের ব্যানার, পরে দুঃখ প্রকাশ
নরসিংদী সরকারি কলেজে সরস্বতীপূজার ব্যানারের ওপর বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ব্যানার লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরে ব্যানারটি সরিয়ে পূজার ব্যানারের নিচে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবিরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটির সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে ছাত্রশিবির ঘটনাটিকে ‘অনিচ্ছাকৃত’ দাবি করেছে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখার ওই ব্যানারে লেখা ছিল, ‘২০২১-২২ সেশনের মাস্টার্স ও মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সব পরীক্ষার্থীর জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে দোয়া ও শুভকামনা।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও সরস্বতীপূজার আয়োজন করেছে নরসিংদী সরকারি কলেজের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। ৩ ফেব্রুয়ারি এই পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ওই আয়োজনে সব শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে গত বুধবার সকালে কলেজের ফটকে একটি ব্যানার টাঙানো হয়। কিন্তু গতকাল সোমবার ইসলামী ছাত্রশিবির নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখার সদস্যরা ব্যানারটির ওপর তাঁদের সংগঠনের ব্যানার টাঙিয়ে দেন। এতে সরস্বতীপূজার ব্যানারটি সম্পূর্ণ ঢাকা পড়ে।
কলেজটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, সরস্বতীপূজার ব্যানারের ওপর ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওই ব্যানার টাঙানোর পরপরই বিষয়টি চোখে পড়ে সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের শিক্ষার্থীদের। তাঁরা এর ছবি তুলে নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আলোচনা-সমালোচনা করেন। পরে বিষয়টি তাঁরা সরস্বতীপূজার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক সন্ধ্যা বালা দাসকে জানান। শিবিরের কলেজ শাখার সভাপতি আরিফ মিয়াকে ডেকে এনে এ বিষয়ে জানতে চান ওই শিক্ষক। আরিফ মিয়া ঘটনাটিকে ‘অনিচ্ছাকৃত’ দাবি করে তাঁদের ব্যানারটি সরিয়ে ওই ব্যানারের নিচে টাঙানোর ব্যবস্থা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি আরিফ মিয়া বলেন, ‘সরস্বতীপূজার ব্যানারের ওপর আমাদের ব্যানারটি টাঙানো হয়েছিল ভুলবশত। বিষয়টি জানার কিছুক্ষণ পরই আমরা ব্যানার সরিয়েও নিয়েছি। এ ছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে দুঃখ প্রকাশ করেছি। পরে একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করার জন্যই ফেসবুকে বিষয়টি ছড়িয়ে দিয়েছে।
জানতে চাইলে নরসিংদী সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং সরস্বতীপূজার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক সন্ধ্যা বালা দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার অনুরোধ, এ বিষয়ে আর লেখালেখির দরকার নেই। তারা ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং নিজেরাই ওই ব্যানার সরিয়ে নিয়েছে। তারা ইচ্ছেকৃতভাবে এটা করেনি।’