বরিশালে আদালত চত্বরে ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে ২ সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ

বরিশালে আদালতের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার দুই সাংবাদিকের মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন হামলাকারীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

বরিশালে আদালত চত্বরে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ীর নেতৃত্বে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করার পাশাপাশি তাঁদের বহনকারী মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

হামলার শিকার এন আমীন রাসেল ও মনিরুল ইসলাম বরিশালের স্থানীয় দুটি দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিক। তাঁদের বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রদল নেতা সোহেল রাঢ়ী।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক এন আমীন রাসেল জানান, তাঁরা আদালত চত্বরে একটি মামলার আসামিদের অবরুদ্ধ করে রাখার খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালত এলাকায় যান। খবর সংগ্রহ শেষে মোটরসাইকেলে ফেরার সময় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ফটকের সামনে তাঁদের ওপর অতর্কিতে হামলা করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিকের অভিযোগ, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী ও তাঁর সহযোগীরা তাঁদের ওপর আকস্মিক হামলা করেন এবং ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে মারধর করতে থাকেন। পরে তাঁদের মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’

এদিকে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সাংবাদিকেরা প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং তাঁরা আদালত–সংলগ্ন ফজলুল হক অ্যাভিনিউ সড়কে বসে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে সাংবাদিকেরা সড়ক থেকে সরে যান।

এদিকে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনিসুর রহমান খান ও সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, আদালত চত্বরে দায়িত্ব পালন করে ফেরার পথে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি বর্বরোচিত ও নিন্দার অযোগ্য। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর গুরুতর আঘাত। তাঁরা অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে প্রশাসন ও রাষ্ট্রের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছেন।

বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করেছি। আশা করি, দ্রুত তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।’