রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আওয়ামী আমলের শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল ও নীতিমালা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার ও নিয়োগ নীতিমালা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘বাংলাদেশ গঠনতান্ত্রিক আন্দোলন’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
প্রায় অর্ধযুগ পর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ শুরু হতে যাচ্ছে। কাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভাইভা বোর্ডের মাধ্যমে এ নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। সমাবেশে বক্তারা অনতিবিলম্বে এই বিজ্ঞপ্তি (সার্কুলার) প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাশেদ রাজন বলেন, ৫ আগস্ট বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি ছিল, আগের বিজ্ঞপ্তিতে আর কোনো শিক্ষক নিয়োগ হবে না। কিন্তু কাল পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের যে ভাইভা ডাকা হয়েছে, সেটা কার্যকর হলে তাঁদের বিজয় পরাজিত হবে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সময়ের বিজ্ঞপ্তি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক নিয়োগ হবে না। বিগত বিজ্ঞপ্তিতে যাঁরা যোগ্য, মেধাবী, পিএইচডিধারী, তাঁরা কেউই আবেদন করেননি। কারণ, তাঁরা জানতেন ওই বিজ্ঞপ্তিতে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হবে না। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন সেই বিজ্ঞপ্তিতেই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের ভাইভা নিতে যাচ্ছে। অবিলম্বে সেই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, বিগত সময়ে অর্থনৈতিক লেনদেন, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ এমন কোনো অনিয়ম নেই, যেগুলো নিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রশাসন ঘটায়নি। আওয়ামী লীগ শাসনামলের বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করে প্রশাসন ফ্যাসিবাদের দোসরদের আবার সুযোগ করে দিচ্ছে। বিপ্লব-পরবর্তী প্রশাসন আগের ফ্যাসিস্ট প্রশাসনের দেখানো পথেই হাঁটছে। অনতিবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিল করে আবার বিজ্ঞপ্তি ও নীতিমালা সংস্কার করে যোগ্যদের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট আমলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপেক্ষ অবস্থানে না থেকে দলীয় প্রশাসনে পরিণত হয়েছিল। দলীয়করণের প্রধান কারণ ছিল অনিয়মতান্ত্রিক দলীয় নিয়োগপ্রক্রিয়া। ফ্যাসিস্ট আমলের সেই নিয়ম ভেঙে নতুন বাংলাদেশে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে।
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ গঠনতান্ত্রিক আন্দোলনের সংগঠক রাবেয়া মুহিব। এ সময় ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মনজুরুল ইসলাম ও সজিবুর রহমান বক্তব্য দেন।