রাজবাড়ীতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মাদক মামলার আসামি ছিনতাই, এসআই আহত
রাজবাড়ীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওপর হামলা চালিয়ে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার এক আসামিকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আহত হয়েছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়াহিদুল হাসান।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাজীবাধা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুরে দ্বিতীয় দফা অভিযান চালিয়ে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে ওই মাদক ব্যবসায়ী পলাতক।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা ডিবির একটি দল সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাজীবাধা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ফরিদ শেখের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় ৩১০টি ইয়াবা বড়ি ও চার বোতল ফেনসিডিলসহ ফরিদ শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ফরিদ শেখকে হাতকড়া লাগিয়ে গাড়িতে তোলার সময় তাঁর পরিবারের সদস্যরা ডিবির ওপর হামলা চালান। তোপের মুখে ডিবির সদস্যরা ফরিদের হাতকড়া খুলে দিতে বাধ্য হন। এ সময় বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় এসআই ওয়াহিদুল হাসানকে।
জেলা ডিবির ওসি মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ফরিদকে মাদকসহ গ্রেপ্তারের পর তাঁর পরিবারের নারী ও পুরুষ সদস্যরা আমাদের ওপর হামলা চালান। এতে এসআই ওয়াহিদুল হাসান আহত হন। তাঁকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
এ ঘটনার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুপুরে রাজবাড়ী সদর থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে পৃথক স্থান থেকে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন স্থানীয় কাজীবাধা গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে আবুল কালাম আজাদ ওরফে পিনু শেখ মেম্বার (৪৭) ও মিন্টু শেখ (৫৫), আবুল কালাম আজাদ ওরফে পিনু শেখ মেম্বারের স্ত্রী সেফালী বেগম (৪৩), ইদ্রিস শেখের স্ত্রী নাসিমা বেগম (৩৫), রফিক শেখের স্ত্রী শিমু বেগম (২০) ও মৃত আবুল হোসেনের স্ত্রী সোহাগী বেগম (২৫)।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শরীফ আল রাজীব প্রথম আলোকে বলেন, ফরিদ শেখ একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ডিবির দল সকালে তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে। এ সময় ফরিদের স্ত্রীসহ তাঁর লোকজন ডিবি পুলিশের ওপর আক্রমণ করেন। দুপুরের দিকে অতিরিক্ত পুলিশের সমন্বিত দল দ্বিতীয় দফা অভিযান চালিয়ে হামলাকারীদের মধ্যে ফরিদের এলাকা থেকে একজন ও রাজবাড়ী শহরের আদর্শ মহিলা কলেজ পাড়া এলাকা থেকে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। ফরিদ ও তাঁর স্ত্রী পলাতক। তাঁদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ফরিদের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন থানায় মাদক ও ডাকাতির ৯টি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।