আজও কেরানীগঞ্জে সেই চাঁদাবাজি ও প্লট বাণিজ্য চলছে: সারজিস আলম

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের শহীদ মিনার চত্বরে পথসভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। আজ মঙ্গলবার দুপুরেছবি: প্রথম আলো

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ৬–৭ মাস আগে খুনি হাসিনার সময় কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি ও প্লট নিয়ে বাণিজ্য চলত। দুঃখের বিষয়, আজও কেরানীগঞ্জে সেই চাঁদাবাজি ও প্লট বাণিজ্য চলছে। বিগত সময়ে কেউ বছর ও যুগ ধরে অভুক্ত ছিল, তারা এখন দুর্বৃত্তদের মতো ভুক্ত হয়ে উঠেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের শহীদ মিনার চত্বরে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকার দোহারে একটি সভায় যোগ দেওয়ার পথে কেরানীগঞ্জে পথসভায় বক্তব্য দেন সারজিস আলম। এ সময় বুড়িগঙ্গা নদীর খালগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে আসার পথে দেখলাম খালগুলো ডাস্টবিনের মতো, না হয় নর্দমার মতো পরিণত হয়েছে। খালগুলো যদি সুন্দরভাবে খনন করা যেত, তাহলে হয়তো কেরানীগঞ্জ একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে উঠতে পারত। খাল খনন ও কেরানীগঞ্জের উন্নয়নে বাজেট এসেছে। কিন্তু ভণ্ড পীর ও তাদের মনিবেরা বাজেটের টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছে। এখন সেই ভণ্ড পীরেরা অপকর্মের দায়ে জেলখানায় রয়েছে। সেখানে থেকে তারা আবারও সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলছে। এসব ভণ্ড পীর, যাদের নিজেদের অস্তিত্ব নেই, যারা নিজেরাও জানে না বাংলার মানুষের কত বড় ঘৃণার জায়গায় তারা রয়েছে।’

সারজিস আলম আরও বলেন, ‘বলা হচ্ছে, এখানকার তরুণেরা বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত কাজে লিপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু এই তরুণেরা যে মাঠগুলোতে খেলবেন ও যে জায়গাগুলোতে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বিচরণ করবেন, সেই জায়গাগুলো হায়েনারা দখল করে নিয়েছে। সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন গড়তে কেরানীগঞ্জে যে উপাদানগুলো প্রয়োজন ছিল, সেগুলো তারা দখল করেছে। আবার তারাই কেরানীগঞ্জে ফিরে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করছে।’

জুলাই অভ্যুত্থানে কেরানীগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘আপনারা যাঁরা এই অভ্যুথানের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁরা এই কেরানীগঞ্জের নেতৃত্বের হাল ধরতে প্রস্তুত থাকুন। আপনারা যদি সেই সাহস নিয়ে কেরানীগঞ্জের মাটিতে দাঁড়ান, হয়তো প্রথম দিনে আপনার সঙ্গে ১০০ জন দাঁড়াবে, কিন্তু এ সংখ্যাটা কয়েক দিনের ব্যবধানে কয়েক হাজারে পরিণত হবে। এ সংখ্যাটা কয়েক মাসের ব্যবধানে লাখে পরিণত হবে। আমরা বিশ্বাস করি, ১০০ জন নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে শুরু করলে অচিরেই সেটি লাখে পরিণত হবে। কিছু অর্থের বিনিময়ে আমরা যদি কারও কাছে নিজেদের বিক্রি করে দিই, তাহলে সাময়িক কিছু ক্ষমতার কারণে দাসত্ব বরণ করে নিতে হবে। সেই শৃঙ্খলের বেড়াজালে গত ১৬ বছরের মতো আবারও আমাদের বন্দী হতে হবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী হাসিবুল ইসলাম, রাসেল আহমেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি আল–আমিন, মিনহাজ হোসেন, জাবেদ হোসেন ও সায়মন চৌধুরী।