সড়ক নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছিল নিম্নমানের ইট, কাজ আটকে দিলেন প্রশাসক
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) একটি সড়ক নির্মাণকাজে ৬০ লাখ টাকার অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ ওঠায় নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রশাসক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। আজ সোমবার সিটি করপোরেশনের মাসিক সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওই সভায় গাজীপুর সিটির প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, সিটি করপোরেশনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জয়দেবপুর-পুবাইল আঞ্চলিক সড়কটি উন্নয়নের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এই প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২৫ কোটি টাকা। সাড়ে ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের এই সড়কের নির্মাণকাজে ম্যাকাডাম (ইটের খোয়া) বিছানাতে পুরোনো ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নজরে এলে জিসিসি প্রশাসক এ বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং অভিযোগের সত্যতা পান।
শরফ উদ্দিন বলেন, জয়দেবপুর–পুবাইল আঞ্চলিক সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটারব্যাপী নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়। এসব খোয়ার মান খারাপ থাকায় সড়কের সব খোয়া অপসারণ করে শিডিউলে উল্লেখিত মানসম্পন্ন নতুন খোয়া ব্যবহার করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। এই সড়কে খোয়া বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা। নিম্নমানের সামগ্রী অপসারণের ফলে সরকারের ৬০ লাখ টাকার অপচয় রোধ হলো এবং নতুন মানসম্পন্ন খোয়া ব্যবহার করে কাজ বাস্তবায়ন করতে পারলে এই কাজের মান উন্নত হবে। ফলে সড়কটি টেকসই হবে। এর সুবিধা পাবেন সিটি করপোরেশনের নাগরিকেরা।
জিসিসির প্রশাসক আরও বলেন, ‘যে কয়দিন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে থাকব, এখানে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতিকে কোনোরকমের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’
প্রশাসকের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সুধী সমাজ। গাজীপুর নাগরিক ফোরামের সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, নতুন প্রশাসক একটি রাস্তার অনিয়ম ধরেছেন এবং এর প্রতিকারের ব্যবস্থা নিয়েছেন, এটি অবশ্যই অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জয়দেবপুর-পুবাইল সড়কটি নগরবাসীর পুবাইল, কালীগঞ্জ, ঘোড়াশাল হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইতিপূর্বেও এ সড়কটি বিভিন্ন সময় সংস্কার ও মেরামত করা হয়। কিন্তু কাজে অনিয়ম ও কারচুপির কারণে টেকসই হয়নি। কয়েক বছর ধরে এ সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে এবং যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং ঢাকা বাইপাস সড়কের যানজট এড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।