রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে আসন পাওয়ার পরদিনই এক আবাসিক শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। পরে খবর পেয়ে হল প্রশাসন আবার ওই শিক্ষার্থীকে ওই আসনেই তুলে দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ১৪৪ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী আবির হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি অভিযোগ করেছেন, ওই হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ফজলে রাব্বি ও কয়েকজন নেতা-কর্মী তাঁর বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়েছিল। রাব্বি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ এবং ওই হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর পক্ষ থেকে রাব্বিকে ওই হল দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হল প্রশাসনের মাধ্যমে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ১৪৪ নম্বর কক্ষে ওঠেন আবির হোসাইন। গতকাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি কক্ষের বাইরে ছিলেন। এ সময় ফজলে রাব্বি ও তাঁর দুজন অনুসারী আবিরের বিছানাপত্র আসন থেকে নামিয়ে দেন। ওই আসনে তাঁদের অনুসারী পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সিয়ামকে তুলে দেন। সন্ধ্যা ছয়টার পর বিষয়টি হল প্রশাসনকে জানান আবির।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হলে আসেন প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন, আবাসিক শিক্ষক তানজিল ভূঁইয়া, অনুপম হীরা মণ্ডল, ফারুক হোসেন ও মামুনুর রশিদ। তাঁরা ফজলে রাব্বির কাছে বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চান। কিন্তু তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে রাত ১১টার দিকে হল প্রশাসন আবিরকে ওই আসনেই তুলে দেয়।
তবে বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত ফজলে রাব্বি বলেন, আসনটি তাঁদেরই ছিল। কিন্তু হল প্রশাসন ওই আসনে আবিরকে তুলে দিয়েছে। আবিরের আবাসিকতা আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। আসন থেকে বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়ার বিষয়টি মিথ্যা।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল রাতে বলেন, ‘একটু আগেই বিষয়টি শুনেছি। প্রাধ্যক্ষ স্যার বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন।’
হল প্রাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী আবির হোসাইন তাঁর বিছানাপত্র নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তাঁদের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছিলেন। আবিরের আবাসিকতা থাকায় আসনটি রাতেই তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।