রাজবাড়ীর আদালতে সাবেক মন্ত্রীসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও নির্যাতনের মামলা

সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিম
ছবি: সংগৃহীত

সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিমসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আজ রোববার রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি আমলি আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এহসানুল হাকিম, আবুল কালাম আজাদ ও বালিয়াকান্দি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সামা মো. ইকবাল হায়াতেরও নাম আছে।

মামলার বাদী রাজবাড়ী জেলা ছাত্রদলের সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের বিলধামু গ্রামের মো. তুহিনুর রহমান। অপহরণ, চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের অভিযোগে এ মামলা করা হয়। আজ বিকেল পাঁচটায় মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণের জন্য বালিয়াকান্দি থানাকে আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেন বাদীর আইনজীবী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন বালিয়াকান্দির নারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম, বালিয়াকান্দি সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নায়েব আলী, মৃগী ইউনিয়নের কলকলিয়া গ্রামের নাছির উদ্দিন ও নজরুল ইসলাম, পাটকিয়া গ্রামের মো. কালাম, জিল্লুল হাকিমের ছেলে মিতুল হাকিম ও অজ্ঞাতপরিচয় তিনজন।

বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি বেলা দুইটার দিকে সাবেক রেলপথমন্ত্রী ও রাজবাড়ী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিমের নির্দেশে আসামিরা তাঁকে বালিয়াকান্দি কলেজ মাঠের পেছন থেকে অপহরণ করে অস্ত্রের মুখে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে নেন। পরে ৪ নম্বর আসামি নায়েব আলীর বাড়ির একটি নির্জন কক্ষে আটকে নির্যাতন করতে থাকেন। মামলার ২ নম্বর আসামি বালিয়াকান্দি থানার সাবেক ওসি আবু সামা মো. ইকবাল হায়াত তাঁকে বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে পায়ের তালুতে আঘাত করেন। এতে তাঁর পা ফুলে যায়। ৫ নম্বর আসামি নাছির উদ্দিন দুই হাতের তালুতে বেত্রাঘাত করে থেঁতলে দেন।

আসামিরা পরে বাদীর বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে মারধর করা হয়। এতে তাঁর মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। এ ছাড়া ঘরে আটকে রাতভর তাঁকে বিদ্যুতের শকও দেওয়া হয়। পরে অবস্থা শুনে তাঁর বাবা অনেক কষ্টে পাঁচ লাখ টাকা জোগাড় করে আসামিদের দেন। বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ওসি পরদিন তাঁকে থানায় নিয়ে একটি পুরোনো মামলায় আদালতে পাঠান।

তুহিনুর রহমান বলেন, তিনি জামিনে বের হয়ে ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নেন। দেশেও তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। তাঁর হাত ও পা মারাত্মক জখম হওয়ায় তিনি এখনো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারেন না। ওই সময় তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিতে গেলে আসামিরা ‘ক্রসফায়ারের’ হুমকি দেন। এরপর প্রাণনাশের ভয়ে পরিবারসহ সবাই পলাতক ছিলেন।

বাদীর আইনজীবী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বলেন, তুহিনুর রহমান ১০ জনকে চিহ্নিত ও অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনকে আসামি করে আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মৌসুমি সাহা মামলাটি থানাকে গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।