জালিয়াতি করে জমি কেনাবেচার অভিযোগে ঝিনাইদহের সাবেক এমপি জাহেদীর বিরুদ্ধে মামলা
যশোরে ভুয়া ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’র কাগজপত্র তৈরি করে এক নারীর ২৩ শতক জমি বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার যশোর আদালতে করা মামলায় ঝিনাইদহ–২ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নাসের শাহরিয়ার জাহেদীসহ চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
শহরের কাজীপাড়া এলাকার আজিজ সিটির বাসিন্দা শেখ আবদুস সবুরের মেয়ে ফারজানা ইকবাল বাদী হয়ে মঙ্গলবার যশোর আদালতে মামলাটি করেন। যশোর আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া মামলাটি আমলে নিয়ে দ্রুততম সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য যশোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দিয়েছেন।
সাবেক এমপি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান। মামলার অপর আসামিরা হলেন যশোর সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের শেখ নিজাম উদ্দীনের ছেলে রবিউল ইসলাম, শহরের পুরোনো কসবা কাজীপাড়ার আবদুল আজিজ সড়কের আবু বক্কার ভূঁইয়ার ছেলে শাহীন ইকবাল এবং দলিল লেখক কাজী রবিউল ইসলাম।
মামলার এজাহার ও বাদীপক্ষের আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১১ মার্চে যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের ২৩ শতক জমি কিনে ভোগদখল করে আসছিলেন ফারজানা ইকবাল। ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর আসামিরা জালজালিয়াতির মাধ্যমে ফারজানা ইকবালকে দাতা ও তাঁর মামা জাকির হোসেনকে (বর্তমানে মৃত) গ্রহীতা করে একটি অফেরতযোগ্য ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ দলিল রেজিস্ট্রি করেন। ওই দলিলে সাক্ষী, শনাক্তকারী ও দলিল লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয় রবিউল ইসলাম, শাহিন ইকবাল ও কাজী রবিউল ইসলামকে।
এজাহারে বলা হয়েছে, ভুয়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদানের ২০ দিন পর ২১ অক্টোবর আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় জালিয়াতির মাধ্যমে জাকির হোসেনকে দাতা ও নাসের শাহরিয়ার জাহেদীকে গ্রহীতা দেখিয়ে একটি কবলা দলিল করেন। গত ২২ ডিসেম্বর আসামিরা মরহুম জাকির হোসেনের ছেলে সিয়ামকে দলিলের বিষয়টি অবহিত করলে ফারজানা ইকবাল তাঁর কাছ থেকে দলিলের বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর ফারজানা ইকবাল ভূমি সাবরেজিস্ট্রি অফিস থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি ও কবলা দলিলের নকল তুলে জালিয়াতির বিষয়টি নিশ্চিত হন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, জমির প্রকৃত মালিক ফারজানা ইকবাল কাউকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেননি। অন্য কাউকে ফারজানা ইকবাল সাজিয়ে তাঁর মামা জাকির হোসেন জালিয়াতি করে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির কাগজ তৈরি করে জমি নাসের শাহরিয়ার জাহেদীর কাছে বিক্রি করেছেন। যে কারণে আসামিদের বিরুদ্ধে জালজালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফরিদুল ইসলাম বলেন, এই জমি বেচাকেনার সঙ্গে জমির প্রকৃত মালিক মামলার বাদী ফারজানা ইকবালের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। বিজ্ঞ আদালত বাদীর আবেদন গ্রহণ করে দ্রুততম সময়ে যশোর পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।