প্রতিমন্ত্রী পলক ও এমপি শিমুলের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর প্রচারের পরপরই নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শফিকুল ইসলাম শিমুল ও নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনের সংসদ সদস্য ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
আজ সোমবার বিকেল ৪টায় এ ঘটনার সূত্রপাত। শিমুলের বাড়ি থেকে একজনকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার জনতা শহরের প্রধান সড়কে নেমে উল্লাস করতে থাকেন। হাতে লাঠিসোঁটা ও জাতীয় পতাকা নিয়ে নানা বয়সের মানুষ দৌড়াদৌড়ি করতে থাকেন। এ সময় একে অপরকে মিষ্টিমুখ করাতেও দেখা যায়।
এর মধ্যে কয়েক শ বিক্ষুব্ধ তরুণ শহরের কান্দিভিটুয়ায় নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের বহুল আলোচিত জান্নাতি প্যালেসে আগুন ধরিয়ে দেন। এই বাড়ির পাশে তাঁর ছোট ভাইয়ের একটি পাঁচতলা বাড়ি ও সংসদ সদস্যের পুরোনো বাড়িতেও জনতা আগুন ধরিয়ে দেন। তিনটি বাড়িতেই লুটপাট চলতে থাকে। সংসদ সদস্যের বাড়িতে আটকে পড়া এক তরুণকে জনতা উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বিকেল চারটার দিকে জেলার সিংড়া উপজেলা সদরের গোডাউন পাড়ায় জুনাইদ আহ্মেদ পলকের বাড়িতেও জনতা আগুন জ্বালিয়ে দেন। এখানেও লুটপাটের ঘটনা ঘটতে থাকে।
নাটোর ও সিংড়ায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নাটোর শহরের কান্দিভিটার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সম্ভাব্য পরিণতি বুঝতে পেরে শফিকুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা আগেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। সংসদ সদস্যের বাড়িটি তাঁর অনিয়ম–দুর্নীতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। জনতা ক্ষোভ থেকে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছেন।
সিংড়া বাজারের ব্যবসায়ী শাহাদত হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন হওয়ায় পলককে এলাকায় সবাই খুব ভয় পেতেন। তাঁর অন্যায়–অত্যাচারের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতেন না। কিন্তু সরকারের পতনের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনতা তাঁর বাড়ি পুড়িয়ে সেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, আগুন লাগানোর কোনো ঘটনা তাঁদের কেউ জানাননি। তাঁরা খোঁজখবর নিচ্ছেন।