নান্দাইলে বন কর্মকর্তার কাছে এবার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চেয়ে চিঠি
ময়মনসিংহের নান্দাইলের বাসিন্দা এক বন কর্মকর্তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে চিঠি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। টাকা না দিলে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর একমাত্র সন্তানের ক্ষতি করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ওই বন কর্মকর্তার নাম মো. আল আমীন। তিনি নান্দাইল পৌরসভার আচারগাঁও উত্তরপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তিনি বন বিভাগের ঢাকা কার্যালয়ে বন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় আল আমীনের স্ত্রী স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষিকা সালমা বেগম গতকাল রোববার রাতে নান্দাইল মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
এর আগে একই এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী সুনিল চন্দ্র বর্মণের কাছে প্রথম চিঠিতে ৫০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় চিঠিতে ১ লাখ চাঁদা দাবি করে দুর্বৃত্তরা। তৃতীয় চিঠিতে চাঁদা পরিশোধ না করায় উষ্মা প্রকাশ করা হয়েছে। চাঁদা দিলে সুনিল চন্দ্র বর্মণ ও তাঁর পরিবারকে দেখেশুনে রাখা হবে। না দিলে খারাপ পরিণতি বরণের হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চাপা আতঙ্ক, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে নান্দাইলের আচারগাঁও উত্তরপাড়ায় আল আমীনের বাড়িতে গিয়ে তাঁর শ্যালক মো. মোজ্জাম্মেল হকের সঙ্গে দেখা হয়। মোজ্জাম্মেল বলেন, তাঁর ভগ্নিপতির কর্মস্থল ঢাকায়। বাড়িতে তাঁর বোন সালমা বেগম, আড়াই বছরের ভাগনি ও বোনের শাশুড়ি বসবাস করেন। বোন কাছাকাছি একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।
মোজ্জাম্মেল হক আরও বলেন, গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে বাড়ির ফটক লাগানোর সময় ফটকের ওপর পলিথিনে মোড়ানো একটি কাগজ ঝুলতে দেখা যায়। কৌতূহলবশত পলিথিন খুলে ভেতরে কাগজে লেখা চিঠিটি পাওয়া যায়। চিঠিতে অসংখ্য অশুদ্ধ বানানে আল আমীনের উদ্দেশে ২ দিনের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে বলা হয়। তাহলে তাঁর পরিবারকে দেখেশুনে রাখা হবে। অন্যথায় বাড়িতে আগুন জ্বলবে ও স্ত্রী–সন্তানের ক্ষতি করা হবে। টাকাগুলো বাড়ির কাছে বাঁধা নৌকায় রেখে দিতে বলা হয়েছে। নৌকা ব্যবহার করে তাঁর বোন সালমা বেগম নরসুন্দা নদী পাড় হয়ে কর্মস্থলে যান।
একই মহল্লার ব্যবসায়ী সুনিল বর্মণকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে আল আমীনের উদ্দেশে চিঠিতে বলা হয়, সুনিল বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছেন। এ কারণে তাঁকে ভুগতে হবে। তাই তিনি (আল আমীন) যেন বিষয়টি থানা-পুলিশকে না জানান, সে বিষয়ে সতর্ক করা হলো।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য বন কর্মকর্তা আল আমীনের মুঠোফোনে কল করা হলে নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে আল আমীনের মা ফরিদা আক্তার বলেন, তাঁর ছেলে বাড়ির বাইরে আছেন। তাঁর পুত্রবধূ চাকরি করেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিনি নাতনিকে নিয়ে বাড়িতে একাই থাকেন। এ ধরনের চিঠি পেয়ে তিনি এখন ভয় পাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহমেদ বলেন, চিঠির ঘটনা নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।