বৃদ্ধকে মাথা ফাটিয়ে হত্যা, একে-অপরকে দুষছেন ছেলে-মেয়েরা
নরসিংদীর মাধবদীতে এক বৃদ্ধকে মাথা ফাটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর সন্তানদের বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে সদর উপজেলার ছোট গদাইরচর এলাকায় ওই বৃদ্ধের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যাকাণ্ডে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলছেন নিহত ব্যক্তির ছেলে ও মেয়েরা।
ওই বৃদ্ধের নাম আবদুল গফুর (৮৫)। তাঁর এক ছেলে ও তিন মেয়ে। ওই বাড়িতে ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন আবদুল গফুর। পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা জানান, আজ সকাল আটটার দিকে আবদুল গফুর রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলে আবদুল হকের ঘরের দরজার সামনে পড়েছিলেন। তাঁর মাথার কয়েক স্থানে ফেটে গিয়ে রক্ত ঝরছিল। তবে তাঁকে আঘাত করার দৃশ্য কেউ নিজের চোখে দেখেননি।
স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাঁর ছেলে-মেয়েরা আবদুল গফুরকে দ্রুত উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেন। পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মাহমুদুল কবির বাসার জানান, আবদুল গফুরকে মৃত অবস্থায় এ হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর মাথার অন্তত দুই জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে আবদুল গফুরকে মৃত ঘোষণার পরপরই তাঁর মেয়েরা ভাই আবদুল হকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুলেছেন। এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল হক পাল্টা অভিযোগ তোলেন তাঁর দুই বোনের বিরুদ্ধে।
নিহত আবদুল গফুরের মেয়ে আসমা আক্তার বলেন, ‘আব্বার দুটি দোকান বছরে দুই লাখ টাকায় ভাড়া নিয়ে কয়েক মাস ধরে ওয়ার্কশপ চালাচ্ছেন একজন। ওই ভাড়ার টাকার একটি অংশ আব্বার হাতে না দিয়ে ভাইয়ের কাছে দিয়েছেন বলে দাবি করছেন ওই ব্যক্তি। তবে আব্বার কাছে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে আসছিলেন ভাই। আজ বিকেলে ওই ব্যক্তি ও ভাইকে নিয়ে একসঙ্গে বসার কথা ছিল আব্বার। ধরা পড়ার ভয়ে ও আব্বার সব সম্পত্তি নিজের করতে আব্বাকে মাথা ফাটিয়ে হত্যা করেছেন ভাই আবদুল হক।’
আবদুল হক বলছেন, ‘আমি বাজার থেকে ফিরে দেখি, আমার ঘরের দরজার সামনে আব্বা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। লোকজন ডেকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি তাঁকে। বোনেরা বলছে, আমি নাকি হত্যা করেছি আব্বাকে। এখন তো মনে হচ্ছে, তারাই আব্বাকে হত্যা করে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে। কারণ, আমি যদি জেলে যাই, তাহলে আব্বার সমস্ত সম্পত্তির ভোগদখল তারাই করতে পারবে।’ ভাড়ার টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের পারিবারিক বিষয়। ভাড়ার টাকা ছেলে হিসেবে আমি নিতেই পারি।’
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়েই ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ওই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। কে বা কারা হত্যার সঙ্গে জড়িত, পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসবে।