মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ার পর গাড়িচাপায় প্রাণ গেল ৪ মাসের শিশুর
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মায়ের কোল থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ার পর তিন চাকার অবৈধ যান করিমনের (শ্যালো ইঞ্জিনচালিত) চাপায় চার মাসের এক শিশু নিহত হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমারখালী পৌর শহরের আমতলা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর চালক আমিনুল ইসলামকে (৩৫) মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। আমিনুল মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মহিদুল ইসলামের ছেলে।
নিহত শিশুটির নাম নাঈম। সে উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের নগর সাঁওতা গ্রামের রিকশাচালক নাজমুল হোসেনের ছেলে। ঘটনার সময় নাঈমকে নিয়ে তার মা, বাবাসহ স্বজনেরা তার খালাতো ভাইয়ের সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, একটি ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানে শিশু নাঈমকে নিয়ে তার মা, বাবা, নানা, নানিসহ স্বজনেরা সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কুমারখালীর এলংগী এলাকা থেকে খোকসার কলিমহর এলাকায় যাচ্ছিলেন। পথে কুমারখালীর পৌর শহরের আমতলা এলাকায় অটোভ্যানটি বাঁক নেওয়ার সময় নাঈমকে নিয়ে তার মা ভ্যান থেকে পড়ে যান। এ সময় মায়ের কোল থেকে নাঈম সড়কে ছিটকে পড়ে। বিপরীত দিক থেকে আসা একটি করিমন নাঈমকে চাপা দেয়। এতে গুরুতর আহত হয় শিশুটি। স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় করিমন চালককে আটকে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রক্তাক্ত নাঈমের মরদেহ নিয়ে স্বজনেরা আহাজারি করতে থাকেন। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ যায়।
বিলাপ করতে করতে নাঈমের মা মালা খাতুন বলেন, ‘আমার সোনা আমায় দেখলেই হাসত রে। আমি কী জবাব দিবনে। আমি ক্যাম্বা থাকবনে রে। কী নিয়ে বাড়ি যাব।’
এ সময় নাঈমের নানা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার আরেক নাতির সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। পথে রাস্তায় বাঁক নেওয়ার সময় আমার মেয়ে মালা ও নাতি নাঈম রাস্তার ওপরে পড়ে যায়। তখন করিমন গাড়ি নাঈমকে চাপা দিয়ে মেরে ফেলে।’
শিশুটির বাবা নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘অবৈধ গাড়ির চাপায় ছেলে মারা গেছে। চালক আটক আছে। বিচারের আশায় থানায় মামলা করব।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলায়মান শেখ বলেন, করিমন গাড়ির চাপায় এক শিশু মারা গেছে। চালককে মারধরের পর জনতা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।