রাজৈরে দাঙ্গা ঠেকাতে ১৪৪ ধারা জারি

মাদারীপুরে রাজৈরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ ঠেকাতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের রাজৈরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে চলমান সংঘর্ষ ঠেকাতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। আজ সোমবার বেলা একটায় রাজৈরের উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহফুজুল হক এই ধারা জারি করেন। এ আদেশ সোমবার বেলা একটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত কার্যত থাকবে।

উপজেলা প্রশাসন থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, সাত দিন ধরে রাজৈর বাজারসংলগ্ন পশ্চিম রাজৈর ও বদরপাশা গ্রামের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিয়মিত দেশি অস্ত্রসহ মারামারি, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, অস্ত্র প্রদর্শনী ও দাঙ্গা–হাঙ্গামা চলছে। আইনশৃঙ্খলা বিনষ্টকারী এসব ঘটনা বন্ধে এবং শান্তি–শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রয়োজনে ফৌজদারি কার্যবিধি মতে ১৪৪ ধারা জারি করা আবশ্যক।

রাজৈরের ইউএনও মো. মাহফুজুল হক প্রথম আলোকে জানান, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাসদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। এ আদেশ অমান্য করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউএনও বলেন, ‘ওই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের আজও সংঘর্ষে জড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। তাই দুই পক্ষের সঙ্গেই আমরা কথা বলেছি। তাদের নিয়ে আমরা বসব। তাদের সমস্যা জানব। তারপর আগামীকাল থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা মোতাবেক রাজৈর বাজার, পশ্চিম রাজৈর, বদরপাশা এবং গোপালগঞ্জ এলাকায় এক বা একাধিক ব্যক্তির চলাফেরা, সভা-সমাবেশ, শোভাযাত্রা, মাইকের ব্যবহার, লাঠিসোঁটা বা যেকোনো প্রকারের আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জরুরি সেবা প্রদানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ আদেশ শিথিল থাকবে।

আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত রাজৈর উপজেলার ব্যাপারীপাড়া মোড়ে বদরপাশা ও পশ্চিম রাজৈর গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুরসহ পশ্চিম রাজৈর গ্রামের ১২টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এর আগে গত শনিবার রাতেও ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে পুলিশের ৮ সদস্যসহ ২৫ জন আহত হন।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আবার সংঘর্ষ বন্ধে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাসদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। দুই গ্রামে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে পুলিশ একত্রে কাজ করছে।