চিকিৎসার ব্যয় বহন নিয়ে বিরক্ত ছেলে হত্যা করেন মাকে: পুলিশ

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার উত্তর জয়কুল গ্রামে মাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার ছেলে জ্যোতিষ বালা। গতকাল শুক্রবার রাতে পিরোজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

মাকে হত্যার অভিযোগে ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার উত্তর জয়কুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলার পর গতকাল শুক্রবার ছেলে জ্যোতিষ বালাকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম জুথিকা বালা (৫৫)। তিনি উত্তর জয়কুল গ্রামে নারায়ণ বালার স্ত্রী।

গ্রেপ্তারের পর মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন জ্যোতিষ বালা। পারিবারিক কলহ ও মায়ের চিকিৎসার ব্যয় বহন করা নিয়ে বিরক্ত ছেলে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানায় পুলিশ।

গতকাল রাত ১০টায় পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, জুথিকা বালার মানসিক সমস্যা ছিল। নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। জুথিকা বালার চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে খরচ হতো। পারিবারিক অশান্তি ও চিকিৎসার ব্যয় বহন করা নিয়ে বড় ছেলে জ্যোতিষ বালা মায়ের ওপর বিরক্ত ছিলেন। ঘটনার দুই দিন আগে তিনি তাঁর মাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে জ্যোতিষ বালা একা ঘরে গিয়ে মাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জুথিকা বালাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেওয়ার পথে রাত দুইটার দিকে তিনি মারা যান।

উপজেলার শ্রীরামকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত জুথিকা বালার চার ছেলে। দুই ছেলে ভারতে থাকেন। মাকে হত্যা করার ঘটনায় আমরা হতবাক হয়েছি। এ হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।’

পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর সবকিছু দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়, এ ঘটনায় কোনো স্বজন জড়িত। নিহতের ছেলে জ্যোতিষ বালার আচরণ ও কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। জ্যোতিষ বালাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।