আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন না সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে

মাইনুল হাসান
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার একমাত্র ছেলে মাইনুল হাসান। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাঁকে মনোনয়ন দেয়নি। তাঁর পরিবর্তে শিক্ষকনেতা মো. শাহজাহান আলম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। আগামী ৫ নভেম্বর ওই আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে রোববার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের এক বৈঠকে শূন্য হওয়া দুটি আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

মাইনুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, দল যাঁকে ভালো মনে করেছে, তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি যেহেতু দলে আছেন, তাই দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। দলের এ সিদ্ধান্তে তিনি খুশি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হব না। দলের নির্দেশ পেলে আমি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করব।’

এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন মাইনুল হাসানসহ ১৬ জন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান আলম মনোনয়ন পান। মনোনয়ন ঘোষণার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে আনন্দমিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ আলীর নেতৃত্বে এ মিছিল হয়। মিছিলে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।

রফিক উদ্দিন ঠাকুর রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমিও মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলাম। এখানে নৌকার প্রার্থী দেওয়ায় আমরা খুশি হয়েছি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে নৌকার জন্য দাবি করে আসছিলাম।’ এর আগে গতকাল মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার পর তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন বলেন, ‘আমরা দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে বলে এসেছি, তাঁকে (মাইনুল) বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের যাকে খুশি মনোনয়ন দেন, আমরা মেনে নেব। আমরা আশ্বাসও পেয়েছি। এরপরও যদি দল তাঁকে দেয়, আমরা সবাই মিলে একজনকে প্রার্থী দেব।’

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় প্রতীক নিয়ে ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন পেয়েছিলেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২৯ ডিসেম্বর দল তাঁকে বহিষ্কার করে। এরপর ১ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রত্যক্ষ সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (কলার ছড়ি) হয়ে তিনি নির্বাচনে জয়ী হন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। পরদিন আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৫ নভেম্বর এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি ওই আসনে উপনির্বাচন হয়েছিল।