বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে কাল সোমবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করবেন আলোচিত আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। আজ রোববার সন্ধ্যায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা তিনি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সংসদীয় আসন দুটির প্রতিটিতে ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থনসূচক তালিকায় গরমিলের কারণ দেখিয়ে দুপুরে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
হিরো আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে থেকেই ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা করেছিলাম। সেই শঙ্কাই সত্যি হলো। আমার জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগও ভয় পেয়েছে। নৌকার চেয়ে আমার জনপ্রিয়তা বেশি শক্তিশালী মনে করেছে। ষড়যন্ত্র করে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। প্রার্থিতা ফিরে পেতে কালকেই ইসিতে আপিল করব। সেখানে ন্যায়বিচার না পেলে উচ্চ আদালতে যাব। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রার্থিতা ফিরে পেতে শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।’
হিরো আলম বলেন, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রতিটি আসনে ন্যূনতম ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থনসূচক নির্ভুল তালিকা দাখিল করেছিলেন তিনি। সেই তালিকা যাচাই করে গরমিল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু কোনো ভোটারের স্বাক্ষর মেলেনি বা কোনো ভোটার স্বাক্ষরের কথা অস্বীকার করেছেন, তা পরিষ্কার করা হয়নি। নাম জানালে সেই ভোটারকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে হাজির করা যেত বলে তিনি জানান।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় কর্মী-সমর্থকেরা হতাশ হয়েছেন জানিয়ে হিরো আলম বলেন, ‘প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় সমর্থকেরা হতাশ হয়েছেন। আমি তাঁদের সান্ত্বনা দিয়ে বলেছি, হতাশার কারণ নেই। টেনশন নেই। প্রার্থিতা ফিরে পেতে কালকেই ইসিতে যাব। আপিল করব। না পেলে উচ্চ আদালতে যাব। হাল ছাড়ব না।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন হিরো আলম। যাচাই-বাছাইয়ের দুই দফায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। উচ্চ আদালতে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। ভোটের দিনদুপুরে তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটলে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই জানিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন হিরো আলম। পরে ওই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী মোশারফ হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি পদত্যাগ করলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
অন্যদিকে বগুড়া-৬ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে বিপুল ভোটে জয়ী হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু তিনি শপথ নেননি। পরে ২০১৯ সালের ২৪ জুনের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ও জেলা বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক গোলাম মো. সিরাজ প্রার্থী হন। সেই ভোটেও নৌকার প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান নিকেতাকে হারান তিনি।