পটুয়াখালীতে লাশ আটকে পাওনাদারদের প্রতিশ্রুতি আদায়
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) সাবেক এক কর্মকর্তার মৃত্যুর পর আজ শনিবার লাশ দাফনে বাধা দেন পাওনাদারেরা। প্রায় দুই ঘণ্টা লাশের কফিন অবরুদ্ধ করে রাখেন পাওনাদারেরা। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় পাওনা আদায়ে প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর লাশ দাফনে অনুমতি দেন পাওনাদারেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর পবিপ্রবির সাবেক ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও জলিশা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম খান গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকিতে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ সকাল ১০টায় পবিপ্রবির মাঠে জানাজা শেষে লাশ দাফনের জন্য রওনা দিলে পবিপ্রবির দ্বিতীয় ফটকে (গেট) বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়য়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা তাঁদের দাবি টাকা আদায়ের দাবিতে লাশ আটকে দেন। তাঁদের দাবি টাকা না দেওয়া পর্যন্ত লাশের কফিন অবরুদ্ধ করে রাখেন তাঁরা। প্রায় দুই ঘণ্টা মরুহুমের কফিন অবরুদ্ধ থাকার পর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শ্রীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে লাশ দাফনে অনুমতি দেন পাওনাদারেরা।
পাওনাদারদের মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সৈয়দ আতিকুল ইসলাম জানান, হাকিম খান ২০১৫ সালে উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের জলিশা গ্রামে জলিশা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়ে ৬৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ/এমপিওভুক্ত করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে ৩ লাখ থেকে শুরু করে ৭ লাখ টাকা অনুদান নেন হাকিম। দীর্ঘ সময় পার হলেও প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ/এমপিওভুক্ত হয়নি। প্রায় ৯ বছর প্রতিষ্ঠানের ৬৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী বিনা বেতনে প্রতিষ্ঠানে সেবা দিয়ে আসছেন।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাকিম খানের মৃত্যুর পর তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা (গার্ড অব অনার) দিয়ে ফেরার পথে স্থানীয় একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক-কর্মচারী মরহুমের লাশ আটকে দেন। পরে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম পাওনাদারদের সঙ্গে দেনা–পাওনা নিয়ে পরে বসার প্রতিশ্রুতি দিলে তাঁরা লাশ দাফনের অনুমতি দেন।
দুমকির ইউএনও শাহীন মাহমুদ বলেন, পাওনাদারদের আপত্তির মুখে হাকিম খানের লাশ দাফনে বিলম্ব হয়েছে। তবে পাওনাদারেরা দাবিদাওয়া নিয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিকেলে তাঁর কার্যালয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।