হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন আসমানি, ক্ষতিকর রাসায়নিক পান করিয়ে পালিয়েছেন স্বামী

যন্ত্রণায় কাতর আসমানিকে (ডানে) সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তাঁর মা মালেকা বিবি। গতকাল রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেছবি: প্রথম আলো

রাজশাহীর বাগমারায় পারিবারিক কলহের জেরে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী মুখের ভেতর ক্ষতিকর রাসায়নিক ঢেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল রোববার নরদাশ ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম আসমানি খাতুন (২৮)। আর তাঁর স্বামীর নাম রশিদুল ইসলাম (৩৫)। তাঁদের বাড়ি চণ্ডীপুর গ্রামে। ঘটনার পর থেকে রশিদুল পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে আসমানির সঙ্গে প্রতিবেশী রশিদুলের বিয়ে হয়। এটি তাঁদের দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্বামীর সঙ্গে আসমানির বিচ্ছেদ হলেও রশিদুলের সঙ্গে প্রথম স্ত্রী আছেন। তাঁকে নিয়ে চণ্ডীপুর গ্রামে থাকেন। অন্যদিকে বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজের সুবাদে রাজশাহী শহরে ভাড়া বাসায় থাকেন আসমানি। ওই বাসাভাড়ার জন্য টাকা চাওয়ায় আসমানির ওপর ক্ষিপ্ত হন রশিদুল। গতকাল দুপুরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আসমানির কাছে এ বিষয়ে কৈফিয়ত চান। একপর্যায়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে ‘ড্যামফিক্স’ নামের তরল রাসায়নিক স্ত্রীর মুখে ঢেলে দেন রশিদুল। তিনি আগেই একটি বোতলে ওই রাসায়নিক নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন। এরপর দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যান রশিদুল। পরে অসুস্থ আসমানিকে হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যেরা।

গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে আসমানিকে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা যায়। পাশে বসে মা মালেকা বিবি মেয়েকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় আসমানির গালের ডান পাশ ও জিহ্বা কালো দেখা যায়। চিকিৎসক এই প্রতিবেদককে জানান, ‘রাসায়নিকের প্রভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ওয়াশ করার তো উপায় নাই। নাড়ি পুড়ে গেছে, স্যালাইন চলছে। তার (আসমানি) শারীরিক অবস্থা ততটা ভালো নয়।’

এ ঘটনায় আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেননি। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে তিনি বিষয়টি জেনেছেন। ঘটনার পর থেকে রশিদুল পলাতক। তাঁকে ধরার জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।