চাঁপাইনবাবগঞ্জে উপনির্বাচন আলোচনায় জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সামিউল হক
বিএনপির সংসদ সদস্যের পদত্যাগে শূন্য হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছেন জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সামিউল হক ওরফে লিটন। গুঞ্জন রয়েছে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল ওদুদের বিরোধী অংশ সামিউল হককে গোপনে সমর্থন দিচ্ছে। এতে পাল্টে গেছে নির্বাচনী সমীকরণ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন যুবলীগ নেতা সামিউল হক।
এদিকে আবদুল ওদুদও গত বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকাকে পরাজিত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন দলের কিছু নেতা-কর্মী। এবার তাঁরা ষড়যন্ত্র করছেন ও নৌকার বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গুঞ্জন রয়েছে সামিউল হককে গোপনে সমর্থন দিচ্ছেন পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোখলেসুর রহমান এবং দলীয় সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। এতে আবদুল ওদুদের সহজে নির্বাচিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাল্টে গেছে এ আসনের নির্বাচনী সমীকরণ। আভাস পাওয়া গেছে নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিভক্তির।
এখন পর্যন্ত (আজ বৃহস্পতিবার) আবদুল ওদুদের নির্বাচনী তৎপরতায় মোখলেসুর রহমানকে দেখা যায়নি। এ ছাড়া সামিউল হকের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তাঁর (সামিউল হক) সঙ্গে দেখা গেছে মোখলেসুর রহমানের মামা ব্যবসায়ী মো. মফিজসহ কিছু সমর্থককেও।
এ ব্যাপারে মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পৌরসভা ও ব্যক্তিগত কাজে এখন পর্যন্ত আবদুল ওদুদের নির্বাচনী তৎপরতায় যেতে পারিনি। ভবিষ্যতে যাব। নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছি। এ প্রতীকের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সামিউলকে সমর্থন করার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’
সামিউল হকের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় মামার উপস্থিত থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার মামা সামিউলের বন্ধু। সে জন্য হয়তো গেছে। তা ছাড়া তিনি আওয়ামী লীগও করেন না। সমর্থকদের উপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই।’
এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা হারুনুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। নেতা-কর্মীরা ভোট দিতে যাবে না। তবে আমি চাইতেই পারি, আ.লীগ প্রার্থী আবদুল ওদুদ নির্বাচিত না হোক।’
উল্লেখ্য, গত পৌর নির্বাচনের দিন সামিউল হক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ‘এটা একটা নোংরা নির্বাচন হয়েছে। জোর করে আমার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, এবারও কি তেমন নির্বাচন হবে?’
এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘অতীত নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে চাই না। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, এখানে অতীতেও কোনো অস্বচ্ছ নির্বাচন হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। তাতে আস্থা রেখেই আমি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।’
জামায়াত-বিএনপির একটি অংশ তাঁকে (সামিউল হক) সমর্থন দিচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেকোনো দলের ভোটাররা আমাকে ভোট দিতে পারে।’