গাজীপুরে দুই মহাসড়কে রাতভর যানবাহনের ধীরগতি, সকাল থেকে অনেকটা ফাঁকা
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফিরছেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। এ কারণে গতকাল শনিবার রাতভর গাজীপুরের দুই মহাসড়কে যানবাহনের ব্যাপক চাপ ছিল। কোথাও কোথাও যানজটও দেখা গেছে। তবে আজ রোববার সকাল থেকে মহাসড়ক অনেকটা ফাঁকা।
হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুরের শিল্পকারখানা শনিবার বিকেলের মধ্যে ছুটি হয়েছে। তবে এবার কারখানাগুলো পর্যায়ক্রমে ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে একসঙ্গে চাপ কম পড়েছে। এ ছাড়া অধিকাংশ কারখানা ১০ দিন ছুটি হওয়ায় শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরতে তাড়াহুড়ো করেননি। ইতিমধ্যে জনবহুল গাজীপুর অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা যাওয়ায় শনিবার রাতে একযোগে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। এতে মধ্যরাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী স্টেশনরোড, কলেজগেট, চেরাগআলী, বোর্ডবাজার, চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহনের ব্যাপক চাপ দেখা যায়। অপর দিকে ঢাকা–টাঙ্গাইল মহাসড়কের সফিপুর বাজার থেকে চন্দ্রা হয়ে টাঙ্গাইলের গোড়াই পর্যন্ত ও নবীনগর-চন্দ্রা রোডের চক্রবর্তী এলাকা পর্যন্ত যানবাহনের চাপ ছিল। দীর্ঘ সময় চন্দ্রা এলাকায় যানজটের কবলে পড়েন যাত্রীরা। তবে সাহ্রির পর থেকে মহাসড়ক অনেকটা ফাঁকা।
জানা যায়, শেষ মুহূর্তে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মনিহারি দোকানদার, রিকশাচালকেরা বাড়ি ফিরছেন। মূলত গাজীপুরের অধিকাংশ ব্যবসা গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকদের ঘিরে। তবে তাঁরা গতকাল রাতেই বাড়ি চলে যাওয়ার সকাল থেকে এসব ব্যবসায়ী ও রিকশাচালকে বাড়ির পথে রওনা দিয়েছেন।
গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় কথা হয় মো. হাবিবুর নামের এক মুদিদোকানদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা সাধারণত গার্মেন্টসের শ্রমিকদের নিয়ে। গতকাল বিকেলে সব শ্রমিক গ্রামে চলে গেছেন। আমি রাতে হিসাব–নিকাশ শেষ করে সকালে গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছি। শ্রমিকদের ছুটি শেষ হলে আমরাও চলে আসব।’
ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার আনন্দের সঙ্গে যানজটের ভোগান্তি ছিল উত্তরের যাত্রীদের চিরায়ত দৃশ্য। তবে এবারের চিত্রটি তাঁদের কাছে অন্য রকম। প্রতিবারের মতো ছিল না চিরচেনা দীর্ঘ যানজট ও ভোগান্তি। অনেকটা মনের আনন্দে হেসেখেলেই ছুটে যাচ্ছেন গাঁয়ের পথে। সাধারণত শিল্পকারখানা ছুটি হলে ঈদের আগে গাজীপুরের দুই মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ঘরমুখী মানুষের ৩ ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিতে ১০ ঘণ্টা লেগে যেত। স্বাভাবিক সময়ের মতো ঈদে বাড়ি ফেরার অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন শহুরে বসবাসরত কর্মজীবী মানুষেরা।
হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে মহাসড়কে বেশ চাপ ছিল, তবে মধ্যরাতের পর থেকেই স্বাভাবিক হতে শুরু করে। আর সকালে মহাসড়ক স্বাভাবিকের চেয়ে কম যানবাহন চলাচল করছে।