ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ সাংবাদিক
সংবাদ প্রকাশের জেরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের তিন সাংবাদিক বেকসুর খালাস পেয়েছেন। আজ সোমবার দুপুরে রংপুরের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক আবদুল মজিদ শুনানি শেষে এ রায় দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সময়ে আদালত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। বাদীর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
বেকসুর খালাস পাওয়া তিন সাংবাদিক হলেন দৈনিক ইত্তেফাক ও একাত্তর টেলিভিশনের (ঘটনার সময় ইনডিপেনডেন্ট টিভিতে কর্মরত) ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি আবদুল লতিফ ও প্রতিদিনের বাংলাদেশের (ঘটনার সময় নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমে কর্মরত) জেলা প্রতিনিধি রহিম শুভ।
আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী আবদুল আল নোমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০২১ সালের ৮ জুলাই ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে ওই তিন সাংবাদিকের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। তানভীর হাসান ওই মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। তানভীর জাগো নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন নিউজ পোর্টালেও কাজ করেন। ২০২১ সালের ৫ জুলাই ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সরবরাহ করা খাবারের মান নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের অভিযোগ এনে ৮ জুলাই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। ১০ জুলাই মামলার আসামি তানভীর হাসানকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তানভীর হাসানকে গ্রেপ্তারের পরে তাঁর হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় হাতকড়া লাগানোর ছবি ওই সময় ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল। পরদিন তানভীরকে জামিন দেওয়া হয়।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সাংবাদিক তানভীর হাসান বলেন, গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে নানাভাবে হয়রানি ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি। জনস্বার্থে সংবাদ করে যাঁরা হয়রানির শিকার করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।
আইনজীবী ও মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২২ সালে জানুয়ারি মাসে ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিশিয়াল আদালত থেকে মামলাটি রংপুরের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে স্থানান্তর করা হয়। একই বছরের ২৩ জুন ঠাকুরগাঁও সদর থানার উপপরিদর্শক ডালিম কুমার রায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মামলার বাদী নাদিরুল আজিজ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।