রাজশাহীর কোন আম কবে বাজারে আসবে
রাজশাহী বাঘা উপজেলার গুটি আম এবার আগে পেকেছে। তাই আম পাড়ার তারিখ এগিয়ে আনা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহীর গুটি আম বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত বছর এ তারিখ ছিল ১৩ মে থেকে।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলার আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত সভায় আম বাজারজাতকরণের বিষয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাজারে নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, এবার আবহাওয়াগত কারণে গত বছরের চেয়ে ৫ দিন বা ১০ দিন আগেই গুটি আম পাকা শুরু হয়েছে। কোনো কোনো বাগানে পাকা আম পড়ে যাচ্ছে। গুটি আম ছাড়া অন্য জাতের সব আম পাড়ার সময়সূচি আগের বছরের মতোই আছে।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর সব জাতের গুটি আম আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে বাজারজাত করা যাবে। অন্য জাতের মধ্যে গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষ্মণভোগ বা লখনা ও রানিপছন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ২৫ মে থেকে বাজারজাত করা যাবে।
এরপর ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি ও ১০ জুন থেকে আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ পাড়া যাবে। এ ছাড়া ১০ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম এবং ২০ আগস্ট থেকে ইলামতি আম পাড়া যাবে।
কাটিমন ও বারি আম-১১ সারা বছর সংগ্রহ করা যাবে। নির্ধারিত সময়ের আগে আম বাজারে পেলে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। তবে কারও বাগানে নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পাকলে তা প্রশাসনকে জানাতে হবে বলে জেলা প্রশাসনের সভায় জানানো হয়।
সভায় বলা হয়, প্রতিবছরের মতো এবারও বাজারে পরিপক্ব ও নিরাপদ আম নিশ্চিত করতেই আম বাজারজাতকরণের দিন ঠিক করা হয়। এবারও তা–ই করা হয়েছে। তবে যদি কোনো কৃষকের গাছে ঘোষিত তারিখের আগেই আম পেকে যায়, তাহলে তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে গাছ থেকে পাড়তে পারবেন। বিষয়টি তদারকির জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমের হাটগুলোতে সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনাররাও বিষয়টি দেখভাল করবেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন এ বৈঠকে ছিলেন। তিনি বলেন, রাজশাহীতে এ বছর ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। গত বছর ১৮ হাজার ৫২৮ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন হবে।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, বাঘার গুটি আম চোরুষা এবার বাড়তি গরমের কারণে আগেই পেকেছে। বিশেষ করে বাঘা উপজেলার আড়পাড়া, বলিহার ও পাকুড়িয়া এলাকায় এই আম পাকা শুরু হয়েছে।