বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ঘটনাস্থলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতিনিধিদল
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি প্রতিনিধিদল। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে ১২ সদস্যের দলটি ক্যাম্পাসে আসে।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে আছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এস এম মঈনুল করিম। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ গেটে (তৎকালীন ১ নম্বর গেট) হত্যাকাণ্ডের স্থানটির ‘স্কেচ ম্যাপ’ তৈরি করেন তাঁরা। পরে তাঁরা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গণমাধ্যমকর্মীসহ অন্যদের সঙ্গে কথা বলেন। উপাচার্য মো. শওকত আলীর সঙ্গে বৈঠকও করেন তাঁরা।
গত বছরের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ১ নম্বর ফটকে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ। এ ঘটনায় এ মাসের ১৩ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে অভিযোগ করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলীসহ অন্যরা। এতে ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এস এম মঈনুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ হয়েছে। এ জন্য তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের বক্তব্য নিচ্ছেন। দুই দিনের এ সফরে তাঁরা আবু সাঈদসহ ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে’ বৃহত্তর রংপুরে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত করবেন। সত্যতা যাচাই শেষে মামলা দায়েরের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আবু সাঈদের হত্যার ঘটনায় একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি চলার সময় ঘটনাস্থলে আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পুলিশ। এ সময় এক হাতে লাঠি নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দেন আবু সাঈদ। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি লুটিয়ে পড়েন।
এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন বহু মানুষ। এতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।