কর্ণফুলী টানেলের পাশ দিয়ে এলাম, সেখানে কোনো গাড়ি দেখলাম না: জ্বালানি উপদেষ্টা

চট্টগ্রামে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। আজ বিকেলে নগরের সার্কিট হাউসেছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‘কর্ণফুলী টানেলের পাশ দিয়ে এলাম, সেখানে কোনো গাড়ি দেখলাম না। এটি একটি বাহাদুরি প্রকল্প। কিন্তু বাহাদুরি করার মতো অবস্থা আমাদের নেই।’

গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। উপদেষ্টা বলেন, মাতারবাড়ীতে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। সেটার সঙ্গে সংযোগ সড়ক, একটি ইকোনমিক জোন ও আর্থিক কর্মকাণ্ড হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হয়েছে একটি টানেল ও বিদ্যুৎকেন্দ্র। ফলে যা হওয়ার, তা-ই হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অপচয় কমানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘বাপেক্স পাঁচ কোটি টাকা করে গাড়ি নিল। অথচ এই খাতের অবস্থা সংকটাপন্ন। সরকার জ্বালানি খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিল। এ রকম বিভাগের একটি প্রতিষ্ঠান এই কাজ করল। আমরা এগুলো (অপচয়) বন্ধ করে দেব। অপরিকল্পিত ও অপচয়ের উন্নয়ন চলবে না।’

অপচয়ের উদাহরণ দিয়ে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, খুলনার রূপসাতে সাত হাজার কোটি টাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে গ্যাস নেই। আবার প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকায় পদ্মা রেলসংযোগ চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্প পাস হওয়ার সময় বলা হয়েছিল, বছরে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আসবে। ছয় মাসে এসেছে ৩৭ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. নুরুল করিম প্রমুখ। সভার সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা সভায় নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ১৯৬৮ সালে চালু হওয়া দেশের একমাত্র জ্বালানি তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) পুরোনো হয়ে গেছে। যেকোনো মুহূর্তে এটি ভেঙে পড়তে পারে। তাই ইআরএল দ্বিতীয় ইউনিট প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। এত দিন দুর্বৃত্তায়নের কারণে ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি।

সভায় মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ একটি পরিচ্ছন্ন শহর চান। সবুজ দেখতে চান। কিন্তু আজ শহরে সবুজের বড় অভাব। খেলার মাঠও নেই। এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশন নানা পদক্ষেপ নেবে।