বঙ্গবন্ধুর খুনিরাও আমার বোনের আশপাশেই আছে: কাদের সিদ্দিকী
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে যারা খুন করেছে, তারা আমার বোনের (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আশপাশেই আছে। অথচ আমি কিছুই করতে পারি না। কিন্তু আমার এলাকার একজন শিশু (গত শুক্রবার লাশ উদ্ধার হওয়া স্কুলশিক্ষার্থী সামিয়া) মারা যাবে আর পুলিশ ভুঁড়ি ভাসাইয়া হাঁটবে—এটা হতে পারে না। সেই পুলিশের এখানে (সখীপুরে) থাকার দরকার নেই।’
আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নিহত সামিয়ার বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সামিয়া (৯) ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। শিশুটিকে অপহরণের পর স্বজনদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। দুই দিন পর গত শুক্রবার বাড়ি থেকে ৪০০ মিটার দূরে জঙ্গল থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি তো এমন দেশ চাই না। আমি সেই দেশ চেয়েছি, যেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা থাকবে। শিশু সামিয়ার বাবা আসামিদের নাম দিলেও পুলিশ ছয় দিনেও আসামি ধরতে পারল না কেন, এর জবাব পুলিশকে দিতে হবে। আমার বোন শেখ হাসিনার যেমন নিরাপত্তা দরকার, তেমনি সামিয়ার বাবারও নিরাপত্তা দরকার।’
টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের সংসদ সদস্য মো. জোয়াহেরুল ইসলামকে উদ্দেশ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘জোয়াহের তুমি এমপি এখন। তুমি যদি ভালোভাবে ডিউটি করতে না পারো, তাহলে তোমারও কিন্তু বিচার হবে। জোয়াহের তোমাকে সাত দিন সময় দেওয়া হলো। আমি এ হত্যার বিচার চাই।’
বক্তব্য দেওয়ার সময় কাদের সিদ্দিকীর পাশে নিহত সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়া ও মা রুপা আক্তার বসে ছিলেন। এ সময় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক, সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেনসহ শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
গত বুধবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে এক শিক্ষকের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায় সামিয়া। প্রাইভেট পড়া শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে বাড়িতে ফিরছিল সে। পথে সহপাঠীরা একটি দোকানে কেনাকাটা করতে দাঁড়ালে সামিয়া একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। এদিকে বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় মা রুপা আক্তার শিক্ষককে ফোন দিয়ে জানতে পারেন, সামিয়া আগেই বাড়ি চলে গেছে। পরে মেয়েকে খুঁজতে বেরিয়ে বাড়ির কাছে একটি স্থানে মেয়ের জুতা পড়ে থাকতে দেখেন রুপা আক্তার। এর কিছুক্ষণ পর বাবার মুঠোফোনে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ইমুতে একটি অডিও বার্তা দেয় দুর্বৃত্তরা। ওর ওই অডিও বার্তা পাওয়ার দুই দিন পর গত শুক্রবার দুপুরে বাড়ির অদূরে জঙ্গল থেকে সামিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জানতে চাইলে সখীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাউদ্দিন আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ ঘটনায় পুলিশের আরও কয়েকটি সংস্থা কাজ করছে।’