সিলেটে চা-শ্রমিকদের একাংশ কাজে, বাকিরা বিক্ষোভে

৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে মালনীছড়া চা–বাগানের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করছেন। সোমবার দুপুরে মালনীছড়া দুর্গা মন্দিরের পাশে
ছবি: আনিস মাহমুদ

সিলেটে চা-শ্রমিকদের একটি অংশ কাজে ফিরেছেন, তবে বড় একটি অংশ এখনো বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ সোমবার সিলেটের লাক্কাতুরা, মালনীছড়া চা-বাগান এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

বেলা একটার দিকে দেখা যায়, মালনীছড়া চা–বাগানের দুর্গা মন্দিরের পাশে বিভিন্ন বাগানের শ্রমিকেরা জড়ো হয়ে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। তবে লাক্কাতুরা চা–বাগানের ১ নম্বর সেকশনে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন। লাক্কাতুরার ১ নম্বর সেকশনে শ্রমিকদের চা–পাতা তোলার কাজ করতে দেখা যায়।

দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলন করছেন সারা দেশের চা-শ্রমিকেরা। এরপর কয়েক দফায় মালিকপক্ষ, প্রশাসন ও চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি তিন পক্ষ। গত শনিবার সরকারের পক্ষ থেকে ১৪৫ টাকা মজুরির সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল। চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বৈঠকে সিদ্ধান্ত মেনে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকেরা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করলে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

আরও পড়ুন

এরপর মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন গতকাল রোববার রাতে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। গভীর রাতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে প্রশাসন ও চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে আলোচনা শেষে আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। পরে দুই পক্ষ যৌথ বিবৃতিতে কাজে ফেরার কথা জানায়।

ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর কাজে ফিরেছেন চা–শ্রমিকদের অনেকে। সোমবার লাক্কাতুরা চা বাগানের ১ নম্বর সেকশনে
ছবি: আনিস মাহমুদ

জেলা প্রশাসকের প্যাডে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে সভার সিদ্ধান্তগুলো জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তাঁর সম্মানে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আজ কাজে যোগ দেবে। আপাতত চলমান মজুরি ১২০ টাকা হারেই শ্রমিকেরা কাজ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে পরবর্তী সময়ে মজুরির বিষয়টি নির্ধারিত হবে।

সিলেটেও ওই সিদ্ধান্তে চা-শ্রমিকদের অনেকে আজ দুপুরে কাজে যোগ দেন, তবে শ্রমিকদের বড় একটি কিছু অংশ আগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, তাঁরা এখনো লিখিত কোনো সিদ্ধান্ত হাতে পাননি। তাঁরা চান, লিখিত সিদ্ধান্ত তাঁদের দেখানো হোক। ভ্যালির সভাপতি সেটি দেখিয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন।

এ বিষয়ে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন পাওয়া যায়।