গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নোমান
নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি আবু মো. নোমান হাসানকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে পঞ্চগড়ের রিকশাচালক আল আমিনকে (২১) হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় পঞ্চগড়ের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ আকতার জুলিয়েট তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর পরপরই তাঁকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়।
নোমান হাসানকে কারাগারে নেওয়ার সময় আদালত চত্বরে জড়ো হওয়া ছাত্রদল-যুবদলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তাঁর রিমান্ড ও বিচার দাবি করেন।
এর আগে গতকাল বুধবার রাতে নীলফামারী সদর উপজেলার ধনীপাড়া এলাকা থেকে আবু মো. নোমান হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশের সহায়তায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৩। পরে র্যাব তাঁকে নীলফামারী সদর থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশ নোমান হাসানকে পঞ্চগড়ে নিয়ে এসে আদালতে হাজির করে।
রিকশাচালক আল আমিন পঞ্চগড় পৌরসভার দরজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর চার বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন আল আমিন। সেদিন দুপুরে দুই তরুণের সঙ্গে বাড়িতে ফেরার পথে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিবের বাড়ির সামনে আল আমিনকে আটক করেন মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকজন। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। তারপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে ছাত্রলীগ নেতা সাদমান সাকিবের বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আল আমিনের সঙ্গে থাকা রায়হানুল ইসলাম ও সুজন ইসলাম নামের দুই তরুণও আহত হন। তবে তাঁদের দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করলেও আল আমিনকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১৪ আগস্ট আল আমিনের পরিবারের পক্ষ থেকে পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়।
এ ঘটনায় গত ১০ নভেম্বর রিকশাচালক আল আমিনের বাবা মো. মনু বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় হত্যা ও লাশ গুমের মামলাটি করেন। সাবেক রেলমন্ত্রী ও পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলামসহ ১৯ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ১৫০ জনকে।
এ মামলার এজাহারনামীয় ৫ নম্বর আসামি নোমান। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি পঞ্চগড় পৌরসভার ডোরোপাড়া এলাকার প্রয়াত মোশারফ হোসেনের ছেলে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, রিকশাচালক আল আমিন হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোমান হাসানকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে।