যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ
মাদারীপুরে যৌতুকের জন্য লিয়ামনি আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার পর লাশ ঘরে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার এওজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্বজনদের দাবি, স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন লিয়ামনিকে হত্যা করে ঘরের ভেতরে লাশ ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে গেছেন।
পুলিশ, স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে দুধখালী ইউনিয়নের ছোবাহান কবিরাজের মেয়ে লিয়ামনির সঙ্গে একই ইউনিয়নের এওজ এলাকার কালাম সরদারের ছেলে মাসুদ সরদারের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে মাসুদ ও তাঁর পরিবারের লোকজন যৌতুকের এক লাখ টাকা দাবি করে আসছিলেন। এ কারণে লিয়ামনিকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করা হতো। এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফা সালিসও হয়েছে। এর জের ধরে লিয়ামনির সঙ্গে তাঁর স্বামীর গতকাল দুপুর থেকে ঝগড়া ও মারামারি হয়।
নিহত লিয়ামনির বাবা ছোবাহান কবিরাজ বলেন, গতকাল দুপুরে লিয়ামনিকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের টাকার জন্য চাপ দেন। বিষয়টি লিয়ামনি তাঁদের কাছে জানান। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর মেয়েকে বিকেল থেকেই মারধর শুরু করেন। মারধরের একপর্যায়ে লিয়ামনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পরে লিয়ামনির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে জানালা দিয়ে পালিয়ে যান স্বামী মাসুদ সরদার ও তাঁর পরিবারের লোকজন। তাঁর মেয়েকে যাঁরা মেরেছেন, তিনি তাঁদের বিচার চান।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূ লিয়ামনির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত গৃহবধূর স্বামী ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তাঁকে খোঁজা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহত লিয়ামনির বোন সাবিনা বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমার বোনকে মেরে ঘরের ভেতর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমার বোনের সঙ্গে যা ঘটেছে, পৃথিবীর অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে যেন না ঘটে। আমরা মাসুদ ও তার পরিবারের সবার বিচার চাই।’
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মাসুদ ও তাঁর পরিবার লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। এর ফলে অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাঁদের মুঠোফোন নম্বরে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।