বাবুগঞ্জ থানায় তিন নারীকে নির্যাতনের অভিযোগে ৩ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার
পুলিশ হেফাজতে তিন নারীকে নির্যাতনের অভিযোগে বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে আদালতের নির্দেশে ওই তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান।
তাঁরা হলেন বাবুগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খলিলুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নাসির উদ্দিন ও কনস্টেবল নিপা রানী বৈদ্য।
বাবুগঞ্জ থানা সূত্র জানায়, বনভোজনে উচ্চশব্দে গান বাজাতে বাধা দেওয়ায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে তিন মার্চ ওই তিন নারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। তিন নারী আদালতে অভিযোগ করেন, থানা হেফাজতে তাঁদের লাঠিপেটা করেন অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্য।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে গত শনিবার রাতে মামলা করার পর তিন পুলিশ সদস্যকে গত রোববার জেলা পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়। এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে চাননি ওসি।
আদালত, থানা–পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, ৩ মার্চ বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ দেহেরগতি গ্রামের ঈশ্বর নারায়ণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়–সংলগ্ন মাহিনুর বেগমের বাড়িতে পারিবারিক বনভোজনের আয়োজন করা হয়। এতে উচ্চশব্দে গান বাজানো হলে স্থানীয় এক ব্যক্তি বিষয়টি বাবুগঞ্জ থানায় জানান। খবর পেয়ে বাবুগঞ্জ থানার টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উচ্চশব্দে গান বাজানো বন্ধ করতে অনুরোধ করে। এ সময় ওই বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে অভিযুক্ত তিন পুলিশ সদস্যের তর্ক হয়।
একপর্যায়ে ওই বাড়ির হেমায়েত মোল্লার স্ত্রী আকাশী বেগম (৩৫), হাবিবুর রহমান রহিমের স্ত্রী রাশিদা বেগম (৪৫) ও তাঁর মেয়ে মালা বেগম (২৫), কবির হোসেন মোল্লার ছেলে মারুফ হোসেন (১৪), নাসির হাওলাদারের ছেলে হাসিব (১৫) এবং উজিরপুরে চাংগুড়িয়া এলাকার সাব্বিরকে (১৪) আটক করে থানায় নিয়ে যান তাঁরা।
পরে আটক ৬ জনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজ ও দায়িত্ব পালনে বাধা ও হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাতের অভিযোগ এনে বাবুগঞ্জ থানার এএসআই নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আটক ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১২ মার্চ বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
আদালতে গ্রেপ্তার আকাশী বেগম, রাশিদা ও মালা বেগম মারধরের শিকার হয়েছেন বলে বিচারকের কাছে জবানবন্দি দেন। এ সময় বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ আদালতের বিচারক মো. নুরুল আমিন তাঁদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন এবং তিন নারীকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য বাবুগঞ্জ থানার ওসিকে আদেশ দেন।