সরিষাবাড়ীতে জমি নিয়ে বিরোধে চাচাত ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মো. আতাউর রহমান (৪৫) নামের এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাঁর চাচাত ভাই মো. আপেল মিয়া তাঁকে খুন করে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আপেলকে না পেয়ে তাঁর মাকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত আতাউর রহমান তারাকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। অভিযুক্ত আপেল মিয়া আতাউর রহমানের চাচা তোতা মিয়ার ছেলে। তিনি ঢাকায় থাকেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির পাশেই ১৩ শতাংশ জমি নিয়ে আতাউর ও আপেলের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ওই জমি নিয়ে একাধিকবার সালিস বৈঠকও হয়েছিল। সালিসে ওই জমির মালিকানা আপেল মিয়া পাননি। তারপরও আপেল মিয়া জমির একটি অংশ দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। আজ দুপুরে আপেল মিয়ার বাড়িতে ঢোকার রাস্তার মাথায় খড়ের পালা দিচ্ছিলেন মো. আতাউর রহমান। এ সময় বাধা দেন আপেল ও তাঁর লোকজন। এই নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে আপেল ও তাঁর লোকজন আতাউর রহমানকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। এ সময় আতাউরকে রক্ষায় এগিয়ে এসে তাঁর স্ত্রী মুক্তা বেগম (৩৫) ও মা আসমা বেগমও (৬০) গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের তিনজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় চিকিৎসক আতাউরকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে আতাউরের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আপেলকে না পেয়ে তাঁর মা আনোয়ারা বেগমকে (৫০) আটক করে।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁন মিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আপেল মিয়া এলাকায় একজন বখাটে হিসেবে পরিচিত। কয়েকটি বিয়েও করেছেন। তিনি ঢাকায় থাকেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রামের বাড়িতে আসেন। নিহত ব্যক্তি ও আপেল সম্পর্কে চাচাত ভাই। তাঁদের মধ্যে একখণ্ড জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ওই জমিতে আপেল মিয়ার কোনো নামই নেই। তারপরও আপেল একরকম জোরপূর্বক ওই জমিতে অংশ আছে দাবি করে আসছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে প্রায় ঝগড়াবিবাদ হতো। আজ আপেল ও তাঁর লোকজন আতাউরকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে তদন্ত করছি। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। আপেলসহ বাকিদের ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় আইনগত ব্যবস্থার নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’