দুর্ঘটনার কবলে শিক্ষা সফরের বাস, দুজন নিহত, আহত অন্তত ৪০
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া এলাকায় শিক্ষা সফরের একটি বাস গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত আরও ৪০ শিক্ষক-শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার বরাশুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত দুজন হলেন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাঁকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য বিদ্যুৎ বিশ্বাস (৫৫) ও বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব সহকারী সুদীপ্ত বিশ্বাস (৩০)।
বাঁকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বজিৎ কুমার পাল বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ৩টি বাসে করে অন্তত ১৫০ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থলে শিক্ষা সফরে যান। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ছাড়াও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির লোকজন ও অফিস সহকারীরা ছিলেন। সারা দিন গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থান ঘুরে সন্ধ্যার পর বাস তিনটি ফেরার পথে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী বাটিয়াপাড়া মোড়ে দ্বিতীয় বাসটি প্রথম বাসটিকে অতিক্রম করতে গিয়ে দ্বিতীয় বাসটি দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে দুজন নিহত হয়েছেন।
খবর পেয়ে কাশিয়ানী থানার পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক বিদ্যুৎ বিশ্বাসকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গতকাল রাত ১০টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স এসে থামছে জরুরি বিভাগের সামনে। দুর্ঘটনায় আহত ১৫ জনকে এ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে একজন মারা যান। মুমূর্ষু অবস্থায় তিনজনকে আইসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। স্বজনদের হাহাজারিতে এক হৃদয়বিদায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় গোটা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে।
রাত সোয়া ১১টার দিকে যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান হাসপাতালে গিয়ে হতাহতদের খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে দুর্ঘটনার শিকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যাপারে যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।
যশোর জেনারেল হাসাপাতালের তত্ত্বধায়ক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে একজন ও যশোর জেনারেল হাসাপাতালে আনার পর একজন, মোট দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এই হাসপাতালে ১৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। ৩ জনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হতে পারে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে এবং চিকিৎসক রয়েছেন।