শ্বশুরবাড়িতে যুবককে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে ভৈরব থানায় মামলা
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শ্বশুরবাড়িতে ইমন মিয়া (৩০) নামের এক যুবককে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ সোমবার স্ত্রী, শাশুড়িসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ভৈরব থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ইমনের বাবা হারুন মিয়া। পুলিশ সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে।
নিহত ইমনের বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর সিকদার বাড়ি এলাকায়। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত করা হয় ইমনের শাশুড়ি হাফসা বেগমকে। তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা। মামলায় নাম উল্লেখ করা অন্য আসামিরা হলেন ইমনের স্ত্রী বিথী বেগম, শ্যালক মো. তন্ময়, প্রতিবেশী রাজন মিয়া, সাজন মিয়া ও বিজন মিয়া। আরও তিন থেকে চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, চার বছর আগে বিথী বেগমের সঙ্গে ইমন মিয়ার বিয়ে হয়। এই দম্পতির একটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে বিরোধ হতো। স্ত্রীর সঙ্গে বিরোধের জের ধরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ইমনকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতেন এবং মানসিক নির্যাতন করতেন। সম্প্রতি দুজনের বিরোধ আরও বাড়ে। এ অবস্থায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন ইমনকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়ছে, গত শুক্রবার রাতে কমলপুর পশু হাসপাতাল এলাকায় ইমনকে পেয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রথমে মারধর করেন। পরে কেরোসিন ঢেলে তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পালিয়ে যান। গুরুতর আহত ইমনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে রাতেই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরদিন শনিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমনের মৃত্যু হয়। পরে ইমনের লাশ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা ভৈরব থানায় গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইমনের মৃত্যুর তথ্য জানার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে গা–ঢাকা দিয়েছেন। স্ত্রী বিথী বেগমের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। প্রতিবেশীরা জানান, স্ত্রী বিথীকে ইমন নানাভাবে নির্যাতন করতেন। এই নিয়ে বিথীর পরিবারের লোকজন ইমনের প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন।
ইমনের বাবা হারুন মিয়া বলেন, ‘এর আগেও একবার আমার ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে সফল হয়নি। এবার স্ত্রীর মুঠোফোন হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার ছেলেকে প্রথমে পিটিয়ে পরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে।’
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।