কাশিমপুর কারাগারে ঈদের ৩২টি জামাত, বন্দীদের জন্য বিশেষ খাবার, নতুন পোশাক
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় চারটি কারাগারের মধ্যে নারীদের একটি ছাড়া বাকি তিন কারাগারে ৩২টি ঈদের জামাত হয়েছে। ৬ হাজার ১৫৮ জন্য বন্দীকে দেওয়া হয়েছে বিশেষ খাবার। এ ছাড়া দরিদ্র বন্দীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে নতুন জামাকাপড়। নতুন পোশাক পরে ঈদের জামাতে নামাজ পড়ার পর নানা আনন্দ আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঈদ উদ্যাপন করেছেন বন্দীরা।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারাগারে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দরিদ্র বন্দীদের চিহ্নিত করে নতুন পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। ঈদের দিন অনেক বন্দীর স্বজনেরা সকাল থেকে কারাগারে আসেন। কারাগারের ব্যবস্থাপনায় ঈদের বিশেষ খাবার থাকলেও স্বজনেরাও তাঁদের রান্না করা খাবার দিয়ে গেছেন। বন্দীদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বন্দীদের অংশগ্রহণে আনন্দ আয়োজনও করা হয়।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ সুপার সুব্রত কুমার বালা প্রথম আলোকে বলেন, কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদের নামাজের ২১টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কারাগারে ২ হাজার ৩৮৩ জন বন্দী আছেন। তাঁদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরাও রয়েছেন এই কারাগারে। বন্দীদের জন্য সকালে ছিল মুড়ি-পায়েস, দুপুরে দেওয়া হয়েছে গরু ও খাসির মাংস, পোলাও, সালাদ, মিষ্টি, কোমল পানীয় ও পান-সুপারি। রাতে দেওয়া হবে ভাত, সঙ্গে রুই মাছ ও মুড়িঘন্ট।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর জ্যেষ্ঠ সুপার শাহজাহান আহমেদ বলেন, সকাল ৯টা থেকে পৃথক তিনটি জামাতের ব্যবস্থা করা হয় তাঁর কারাগারে। হাই সিকিউরিটি কারাগারে কোনো সাংস্কৃতিক আয়োজন না থাকলেও তাঁদের কারাগারে বন্দীদের জন্য সাংস্কৃতিক আয়োজন করা হয়। বন্দীরাই বিভিন্ন আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন। এ কারাগারে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১ হাজার ১৫৪ বন্দী আছেন। ঈদ উপলক্ষে শতাধিক দরিদ্র বন্দীর মধ্যে লুঙ্গি বিতরণ করা হয়েছে।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সুপার আমিরুল ইসলাম জানান, বন্দীদের জন্য এ কারাগারে ঈদের আটটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কারাগারে বন্দীর সংখ্যা ২ হাজার ৮১। তাঁদের মধ্যে শতাধিক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দী চার শতাধিক। এ কারাগারেও শতাধিক দরিদ্র বন্দীকে লুঙ্গি দেওয়া হয়েছে। বিকেলে রয়েছে বন্দীদের জন্য সাংস্কৃতিক আয়োজন।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের সুপার ওবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নারী বন্দীদের জন্য ঈদের জামাত না হলেও তাঁরা নিজেরা নিজেদের মতো করে নামাজ আদায় করেছেন। কারাগারের ডে-কেয়ার সেন্টারে মা-বন্দীদের সঙ্গে আসা শিশুরা রয়েছে। বন্দীদের অংশগ্রহণে ঈদ আনন্দ ও বিভিন্ন বিনোদনের আয়োজন করা হয়। এখানে ৫৪০ জন বন্দী রয়েছেন। ওই কারাগারের দরিদ্র বন্দী ও শিশুদের নতুন জামা উপহার দেওয়া হয়েছে। অন্য কারাগারের মতো বিশেষ খাবারের একই আয়োজন ছিল।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারের সবাইকে নতুন পোশাক দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে দরিদ্র ২০০ জন বন্দীকে জামাকাপড় দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পের আরও ৩০০ জনকে ঈদের পোশাক উপহার দেওয়া হয়েছে।