লালমনিরহাটে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে সোনালী ব্যাংকে চুরির চেষ্টা

সোনালী ব্যাংকের লালমনিরহাটের বড়বাড়িহাট সোনালী ব্যাংক শাখার ভাণ্ডারকেক্ষের মেঝেতে খোঁড়া ছয় ফুট গভীর গর্ত। আজ মঙ্গলবার সকালেছবি: প্রথম আলো

সোনালী ব্যাংকের লালমনিরহাট সদরের বড়বাড়িহাট শাখায় ছয় ফুট গভীর গর্ত খুঁড়ে চুরির চেষ্টা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরীদের গর্ত খোঁড়ার বিষয়টি নজরে আসে। তবে ব্যাংক থেকে কোনো টাকা খোয়া গেছে কি না, তা জানা যায়নি।

আজ মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনালী ব্যাংকের বড়বাড়িহাট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো. রাজু মিয়া। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।

সোনালী ব্যাংক ও লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশসহ এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার ওই শাখার নিরাপত্তা প্রহরী আসাদুল ইসলাম শাখা ব্যবস্থাপকের নির্দেশে ব্যাংকের ভান্ডারকক্ষে রাখা কাগজপত্র গোছাতে গিয়ে দেখতে পান, সেটির মেঝেতে ছয় ফুট গভীর একটি গর্ত। ওপরে দেড় ফুট গোল করে গর্তটি কাটা। তিনি ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপককে মুঠোফোনে জানান। সোনালী ব্যাংক, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ও আরেক নিরাপত্তা প্রহরী খায়রুল হক ব্যাংকের ভেতরে ছিলাম। গতকাল রাতে ব্যাংকের স্টোররুমে ভাউচারসহ অন্যান্য কাগজপত্র এলোমেলো অবস্থা থেকে গোছানোর কাজ করছিলাম। এ সময় মেঝে থেকে একটা বস্তা সরানোর সময় রুমের মেঝেতে গর্ত খুঁড়ে থাকা দেখতে পাই।’

আজ সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, বড়বাড়িহাট সোনালী ব্যাংক শাখা ভবনের পেছনে একটি গর্ত খোঁড়া হয়েছে। সেই গর্তের পাশে ব্যাংক ভবনের দেয়ালের কয়েক সারি ইট খুলে ফেলে রাখা হয়েছে। দুর্বৃত্তরা দেয়ালের সেই খোলা স্থান দিয়ে ব্যাংকে ঢোকার চেষ্টা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভান্ডারকক্ষের মেঝের নিচে আনুমানিক ছয় ফুট গভীর গর্ত খোঁড়া হয়েছে। ভান্ডারকক্ষ লাগোয়া অপর একটি কক্ষে ব্যাংকের ভল্ট রয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের লালমনিরহাটের বড়বাড়িহাট শাখার ভবনের পেছনেও গর্ত খুঁড়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

সোনালী ব্যাংক বড়বাড়িহাট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো. রাজু মিয়া বলেন, ‘ঘটনাটি নিরাপত্তা প্রহরীর মাধ্যমে জানার পর ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বিষয়টি জানার পর গতকাল সোমবার রাতেই সোনালী ব্যাংক কুড়িগ্রাম থেকে এজিএম শাহিন আক্তার ভূঁইয়া, লালমনিরহাট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার এস এম তানজির পারভেজসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুর নবী বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে গত সোমবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থল থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় সুড়ঙ্গের মুখ থেকে লোহার জগ, ড্রিল মেশিন, লোহার শাবল, করাতসহ অন্যান্য যন্ত্র ও সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।’

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে সোনালী ব্যাংক রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম মামুন উর রশিদ হেলালী তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। তদন্ত কমিটির প্রধান কুড়িগ্রাম সোনালী ব্যাংকের এজিএম শাহিন আক্তার ভূঁইয়া। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।