সুন্দরবনে হরিণের মাংসসহ এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার
গহিন সুন্দরবনে অবৈধভাবে শিকার করা হরিণের পাঁচ কেজি মাংসসহ আবুল কালাম মোড়ল (৪০) নামের এক শিকারিকে গ্রেপ্তার করেছেন বনরক্ষীরা। আজ শনিবার সকালে সুন্দরবনের শাকবাড়িয়া নদীর চর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছেন বন বিভাগের বজবজা টহল ফাঁড়ির রক্ষীরা।
আজ বিকেলে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বাড়ি সুন্দরবন–সংলগ্ন কয়রা উপজেলার জোড়শিং গ্রামে।
সুন্দরবনের বজবজা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কয়েকজন বনরক্ষীকে নিয়ে তিনি অভিযানে নামেন। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে শাকবাড়িয়া নদী ধরে কিছু দূর এগোতেই দেখতে পান, এক লোক একটি সাদা রঙের ব্যাগ হাতে নদীর চর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। বনরক্ষীরা তাঁকে ধরে হাতে থাকা ব্যাগটি তল্লাশি করতেই ব্যাগের ভেতর হরিণের মাংস দেখতে পান। সেখান থেকেই মাংসসহ আবুল কালাম মোড়লকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সুন্দরবন-সংলগ্ন কয়রা উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, উপজেলার একটি ছোট নদী পেরোলেই সুন্দরবনের গহিন জঙ্গল। পেশাদার হরিণশিকারিরা রাতের বেলায় গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে নাইলনের দড়ির একধরনের ফাঁদ হরিণের নিয়মিত যাতায়াতের পথে পেতে রাখেন। চলাচলের সময় হরিণগুলো সেই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণের মাংস বিক্রি করা হয়।
সুন্দরবনের বজবজা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘একটি হরিণে ২৫ থেকে ৫০ কেজি পর্যন্ত মাংস হয়। আমরা মাত্র সাড়ে পাঁচ কেজি মাংস উদ্ধার করেছি। বাকি মাংসের ক্রেতা কারা, শিকারের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত, আমরা এগুলো বের করার চেষ্টা করছি। আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বন্য প্রাণী নিধন আইনে মামলার পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশে হরিণের মাংস মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।’
সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাছানুর রহমান বলেন, জনবল কম হওয়া সত্ত্বেও সুন্দরবনের বন্য প্রাণী নিধন এবং অন্যান্য অপরাধ দমনে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন বনরক্ষীরা। কয়রা উপজেলার জোড়শিং ও আংটিহারা এলাকায় হরিণশিকারি চক্র বেশি। শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সুন্দরবনের বন্য প্রাণী রক্ষায় বন বিভাগকে সহযোগিতা করতে স্থানীয় মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।