সন্দ্বীপের কৃষকেরা প্রথমবারের মতো সরকারের কাছে ধান বিক্রি করলেন
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে প্রথমবারের মতো ধান কেনা শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ। প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে আমনের চাষ হলেও এর আগে সরকারের কাছে ধান বিক্রির সুযোগ পাননি এই দ্বীপ উপজেলার কৃষকেরা। ফলে ধানের ন্যায্য দাম পাচ্ছিলেন না তাঁরা। স্থানীয় ধানের কারবারিদের কাছে ধান বিক্রি করে কেজিপ্রতি ২০ টাকা করে পাচ্ছিলেন তাঁরা। চলতি বছর সরকার প্রতি কেজি আমন ধান ৩৩ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৪ নভেম্বর প্রথম আলোয় এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে খাদ্য বিভাগ সন্দ্বীপের কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার ঘোষণা দেয়।
আজ বুধবার বেলা ১১টায় সন্দ্বীপ উপজেলা খাদ্যগুদামে ট্রাকে ভরে ধান নিয়ে আসেন বেশ কয়েকজন কৃষক। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের ধানের আর্দ্রতা ও চিটা পরীক্ষা শেষে ধান বুঝে নিতে দেখা যায়। সবুজচরের কালাপানীয়া অংশ থেকে ধান নিয়ে আসেন কৃষক মো. নাছির (৬০)। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে আমনের চাষ করছেন। এত দিন কম দামে ধান কারবারিদের কাছে বিক্রি করেছেন। এবার সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারছেন বলে তিনি উচ্ছ্বসিত।
নাছিরের ধান যখন মেপে নেওয়া হচ্ছিল, তখন আরও কয়েকজন কৃষক ধানভর্তি ট্রাক নিয়ে খাদ্যগুদামে প্রবেশ করছিলেন। তাঁদের একজন সবুজচরের মো. রাশেদ (৪৫) প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তিন টন ধান নিয়ে এসেছেন। এ বছর রাশেদ ৮ কানি জমিতে আমনের চাষ করেছিলেন। সরকার ধান নিতে শুরু করায় ভবিষ্যতে তিনি আরও বেশি জমিতে আমনের চাষ করবেন বলে জানান।
সন্দ্বীপের কৃষকেরা প্রাকৃতিক দুর্বিপাক ও স্থানীয় বাজারে সারের উচ্চ মূল্যের কারণে আমন চাষে লোকসানের কথা জানিয়েছিলেন প্রথম আলোর কাছে। এ সময় তাঁরা সরকারের কাছে ধান বিক্রির দাবি জানান। সন্দ্বীপ উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাইফুল ইসলাম চালকল না থাকায় ধান কেনা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেছিলেন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিগ্যান চাকমা ধান কেনার নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রথমবারের মতো সন্দ্বীপের কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হয়। এ সময় উপস্থিত কৃষক ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার প্রক্রিয়া সহজতর করার পরামর্শ দেন ইউএনও।