‘বিয়ের চাপ দেওয়ায়’ নারীকে খুন, সহকর্মী গ্রেপ্তার

ছবি: পিবিআইয়ের সৌজন্যে

দুজনই একই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। গড়ে উঠে সম্পর্ক। নিবন্ধন ছাড়া স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুজনে বসবাস করতে থাকেন এক মাস ধরে। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বিয়ের নিবন্ধন করতে রাজি হচ্ছিলেন না স্বামী পরিচয়ে বসবাস করা যুবক। তাই মামলা ও লোকজনকে বলে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁর সঙ্গে বসবাসকারী নারী। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গলাটিপে খুন করা হয় ওই নারীকে।

চট্টগ্রামে জোসনা আক্তার (৩০) নামের এক নারীকে হত্যার ঘটনায় তাঁর এক সহকর্মীকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে জানানো হয় এ তথ্য। গতকাল রোববার নগরের চান্দগাঁওয়ের মোহরা এলাকা থেকে নয়ন বড়ুয়া (২৯) নামের ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার বিকেলে নগরের লালখান উড়ালসড়কের নিচে বস্তাবন্দী কম্বল মোড়ানো অবস্থায় অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে জোসনার লাশ উদ্ধার হয়। পরে ওই দিনই লাশটি আঙুলের ছাপ যাচাইয়ের মাধ্যমে জোসনা আক্তারের বলে শনাক্ত করে পিবিআই। এরপর নিহত জোসনার বড় বোন তৈয়বা বেগম বাদী হয়ে খুলশী থানায় মামলা করেন। সূত্রবিহীন এই মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় নিহত নারীর সহকর্মী নয়ন বড়ুয়া জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর হাতের আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা তথ্যভান্ডারের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। সেখানে একটি মুঠোফোন নম্বরও পাওয়া যায়। সেই নম্বরের কলের তালিকা দেখে নয়ন বড়ুয়াকে শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি খুন করার কথা স্বীকার করেছেন।

সামনে একটি বস্তা রাখা। রিকশায় করে যাচ্ছেন নয়ন বড়ুয়া
ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেওয়া।

পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেপ্তার নয়ন ও জোসনা দুজনই নগরের কালুরঘাটে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করে আসছিলেন। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠলে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস শুরু করেন। একপর্যায়ে নয়নকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন জোসনা। নইলে মামলা কিংবা লোকজনকে বলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার সকালে ভাড়া বাসাটিতে জোসনাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়। পরে বস্তাবন্দী করে লাশটি রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় লালখান বাজার উড়ালসড়কের নিচে ফেলে দিয়ে চলে যান। গ্রেপ্তার নয়ন বড়ুয়াকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার উদ্দেশ্যে আজ সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।