‘আজকা ত্রাণ দিছো, কষ্টের মধ্যে বড় খুশি অইছি’

প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণ পেয়ে খুশি দুই নারী। শুক্রবার দুপুরে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের উত্তর ইসলামপুর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

‘বিশ দিন অইছে তাঁবুত পানি। পানি ওঠার পরে একটা দোকানঘরে আইয়া উঠছি। সব দিক দিয়া পানির লাগি এখন আর ব্যবসাত যাইতে পারি না। আমি ব্যবসাত গেলে ঘরোখানির ব্যবস্থা হয়। নাইতে উপাস থাকি। যেদিন তাঁবু ডুবছে, এরপর দুই দিন উপাস আছিলাম। কারও কাছে সাহায্য পাইছি না। তাঁবুর সবাই আমার মতোনই কষ্ট করে চলে। আজকা ত্রাণ দিছো, কষ্টের মধ্যে বড় খুশি অইছি। কয় দিনের লাইগ্যা কষ্ট কমছে।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের ত্রাণ পেয়ে এসব কথা বলছিলেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের বেদেপল্লির বাসিন্দা পারভীন খাতুন (৪০)। স্বামীহারা এই নারী গ্রামে গ্রামে গিয়ে কবিরাজি ওষুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

আরও পড়ুন

আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলা সদরের বেদেপল্লি ও ৪ নম্বর উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের কটালপুর গ্রামের উত্তরপাড়ায় ৬০টি বন্যার্ত পরিবারের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে ছিল ১০ কেজি চাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি ডাল ও ১ কেজি লবণ। প্রথমে বেদেপল্লির বন্যার্ত পরিবারগুলো যেসব স্থানে আশ্রয় নিয়েছে, সেসব স্থানে গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। ত্রাণ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বন্যার্ত মানুষেরা।

প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণ পেয়ে খুশি বেদেপল্লির বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের উত্তর ইসলামপুরের সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

উপজেলা পরিষদের একটি সরকারি ঘরে থাকতেন ফাতেমা আক্তার (৫০)। ১৫ দিন ধরে ঘরে পানি থাকায় আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে তাঁর পরিবার। নিজ বাড়িতে না থাকাতে কষ্টে দিন কাটে বলে জানান এই নারী। ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘কোনো দিন খাইয়া, কোনো দিন না খাইয়া পার করি। ঘর নাই আমার। কেউ আমরারে ত্রাণ দেয় না। আমি যে কি কষ্টে আছি দেখার কেউ নাই। অউ পইলা তোমরা ত্রাণ দিছো। মনে শান্তি পাইছি।’

আরও পড়ুন

ত্রাণসামগ্রী বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সভাপতি অন্তর শ্যাম, সাধারণ সম্পাদক সমীর বৈষ্ণব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গায়ত্রী বর্মণ, উপসাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হক, অর্থ সম্পাদক ফারহানা হক, প্রচার সম্পাদক হৈমন্তী দাস, ম্যাগাজিন সম্পাদক শেখ ফয়সাল, দপ্তর সম্পাদক সমরজিৎ হালদার, সদস্য সাজন বিশ্বাস, জয় তালুকদার, কৃত্য ছত্রী প্রমুখ।

প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ত্রাণ পেয়ে খুশিতে বাড়ি ফেরেন বন্যার্ত মানুষেরা। শুক্রবার বিকেলে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের কটালপুর গ্রামের উত্তরপাড়ায়
ছবি: প্রথম আলো

এর আগে গত মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শিমুলতলা গুচ্ছগ্রামের ১৫০টি পরিবার, বুধবার গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউনিয়নে ৫০টি পরিবার এবং গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট সদরের সারদা হল ও জাঙ্গাইল গ্রামের ১০০টি বন্যার্ত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করে প্রথম আলো ট্রাস্ট। প্রথম আলো ট্রাস্টের এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে আইডিএলসি ফিন্যান্স পিএলসি। বন্যার্ত মানুষের জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টে পাঁচ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই অনুদানের টাকায় বন্যার্ত মানুষের কাছে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন

বন্যার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল। হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।

আরও পড়ুন